ভয়াবহ দুর্ঘটনা পুজো মণ্ডপে! বৃহস্পতিবার দর্শনার্থীদের জন্য চেতলা অগ্রণী ক্লাব পুজো মণ্ডপ বন্ধ, ফেসবুক পোস্ট করে ঘোষণা কর্তৃপক্ষের

Durga Puja 2025 Chetla Agrani Club announces Pandal will be closed today
 
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার দুপুর। দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে শহরের রাস্তায়। তার মাঝেই শহরের অন্যতম জনপ্রিয় পুজো কর্তৃপক্ষ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বড় ঘোষণা করল।
জানানো হল, অভূতপূর্ব দুর্ঘটনার কারণে, আজ, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ থাকবে চেতলা অগ্রণী ক্লাবের পুজো মণ্ডপ। দর্শনার্থীদের জন্য আবার কবে, কখন এই পুজো মণ্ডপ খুলে যাবে, তা জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।  
কী কারণে এই সিদ্ধান্ত? কেন আচমকা বন্ধ থাকবে পুজো মণ্ডপ? সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ভাইরাল হতেই প্রশ্ন ঘুরতে শুরু করে। স্বাভাবিকভাবেই বৃহস্পতিবারেও বহু দর্শনার্থীদের ঠাকুর দেখার এক কথায় প্যান্ডেল হপিংয়ের তালিকায় ছিল এই পুজো মণ্ডপ। তাহলে? কী ঘটল?
ঘটনা প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল চেতলা অগ্রণী ক্লাবের সঙ্গে। আজকাল ডট ইন-কে ফোন পুজোর সম্পাদক জানান, 'এত ভয়াবহ দুর্যোগ। তারপরে সমগ্র পরিস্থিতির তদারকি ও পরিদর্শন,  এবং ভিতরের পরিস্থিতি কেমন রয়েছে তা খতিয়ে দেখতে, সবথেকে বড় কথা দর্শনার্থীদের সুরক্ষার জন্য বৃহস্পতিবার বন্ধ রাখা হচ্ছে মণ্ডপ। আগামিকাল, শুক্রবার থেকে দর্শকদের জন্য যথারীতি খুলে যাবে এই পুজো মণ্ডপ।' 
একই সঙ্গে জানা গিয়েছে, 'পুজো মণ্ডপে আগুন, বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে। শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ড। প্যান্ডেল কর্তৃপক্ষ আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে।' 
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলাব্র সকাল, কয়েকঘণ্টার বৃষ্টি এবং খাস কলকাতার জলমগ্ন পরিস্থিতি। সোমবার রাত্রি থেকে বৃষ্টি শুরু। একনাগাড়ে বৃষ্টি চলছে মঙ্গল সকালেও। কয়েকঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে ডুবেছে শহর। উত্তর, মধ্য, দক্ষিণ কলকাতা একপ্রকার জলের তলায়। জলমগ্ন গোটা সল্টলেক চত্বর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকাও। মঙ্গলবার শহরের অবস্থা, মানিকতলা থেকে মুদিয়ালি, সর্বত্র কোমর জল। ডুবে গিয়েছে রাস্তা-ঘাট। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি, অটো জলের তলায়। লাইনে জল জমে গিয়ে ব্যাহত ট্রেন, মেট্রো চলাচল। কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। শহরবাসী মনে করতে পারছিলেন না, প্রতি বর্ষায় কম বেশি জলযন্ত্রণা হলেও, শেষ কবে এই পরিমাণ বৃষ্টির সাক্ষী থেকেছে শহর। 

মঙ্গলবার কী অবস্থায় দাঁড়িয়েছিল শহরের পুজো প্যান্ডেলগুলি?

কাশীবোস লেন-পুজো মণ্ডপে ঢোকার মুখের অংশ, অর্থাৎ কাশীবোস লেন জল থইথই অবস্থা। এদিক ওদিক হেলে গিয়েছিল স্টল, দোকান। স্থানীয়রা নিত্যপ্রয়োজনীর জিনিসটুকুও কিনতে যেতে পারছিলেন না ওই রাস্তা ধরে, বলছেন, ওই গলিপথ ধরে এগোনো সম্ভব নয় কোনওমতেই।

চোরবাগান সর্বজনীন- মুক্তারামবাবু লেন, এমনিতেই অল্প বৃষ্টিতে জল থইথই অবস্থা হয় সেখানে। প্রবল বর্ষণে গলিপথ অবরুদ্ধ, জল ঢুকে গিয়েছিল মণ্ডপের ভিতরে। চিন্তার রেশ পুজো কমিটির প্রত্যুষা ব্যানার্জির গলায়। বললেন, এত বছরের বাসিন্দা, কখনও এমন পরিস্থিতি দেখেননি।

হাতিবাগান সর্বজনীন- প্যান্ডেলের বাইরের অংশ ঢাকা থাকায় বাঁচোয়া, কিন্তু উত্তরের গলির জল ছাড়েনি প্যান্ডেলের ভিতরের অংশকে। যে প্যান্ডেলের থিম ঘাটের কথা, সেই প্যান্ডেল কার্যত নদীর ঘাটে পরিণত হয়েছে। অতীন ঘোষ মঙ্গলবার পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান। পুজো কমিটির শাশ্বত জানান, জল না নামা পর্যন্ত বুঝতে পারছেন না ক্ষতির পরিমাণ। 

টালা প্রত্যয়- মঙ্গলবার বৃষ্টি হচ্ছে মুষলধারে। যদিও টালা প্রত্যয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, তাতে মণ্ডপের ক্ষতি হয়নি। তবে আজ আর ভিড় হবে না, সেটাও একপ্রকার ক্ষতি বইকি! ভাবনা উদ্যোক্তাদের।

হাতিবাগান নবীনপল্লী- হুড়মুড়িয়ে প্যান্ডেলের মধ্যে জল ঢুকেছিল সোমবার রাত থেকেই। বেলা গড়িয়ে বিকেল হলেও জল নামার কোনও নাম নেই। আকাশের মতোই মুখ ভার উদ্যোক্তাদের। পরিস্থিতি একই হয়েছিল শ্রীভূমি থেকে ম্যাডক্স।