সকলের কাছে ক্ষমা চাইলেন নলিন সরকার স্ট্রিট পুজোর শিল্পী সনাতন দিন্দা, কী এমন হল?

Durga Puja 2025: সপ্তমীর সন্ধ্যা। রাস্তায় রাস্তায় মানুষের ঢল। চারিদিকে আলোর রোশনাই। আলাদা উন্মাদনা কাজ করছে বাঙালির মনে। আবহাওয়া সঙ্গ দেওয়ায় উত্তেজনা আরও তুঙ্গে উঠেছে।

Durga Puja 2025: Artist of the Nalin Sarkar street puja Pandal Sanatan Dinda apologised to everyone
শিল্পকর্মের সঙ্গে শিল্পী সনতান দিন্দা। ছবি: নলিন সরকার স্ট্রিট দুর্গোৎসবের ফেসবুক পেজ।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: সপ্তমীর সন্ধ্যা। রাস্তায় রাস্তায় মানুষের ঢল। চারিদিকে আলোর রোশনাই। আলাদা উন্মাদনা কাজ করছে বাঙালির মনে। আবহাওয়া সঙ্গ দেওয়ায় উত্তেজনা আরও তুঙ্গে উঠেছে। আট থেকে আশি সকলেই রাস্তায় নেমেছেন প্রতিমা দর্শনে। উত্তর কলকাতার পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম সেরা পুজো নলিন সরকার স্ট্রিট। সেরা প্রতিমা হোক বা সেরা পুজোমণ্ডপ, কোনও না কোনও বিভাগে প্রতি বছরই পুরষ্কার অর্জন করে পুজোটি। কিন্তু এ বছর হয়েছে অন্যথায়। বিশেষ কোনও পুরষ্কার জিততে পারেনি নলিন সরকার স্ট্রিট। সেই কারণে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন এই বছরে শিল্পী সনাতন দিন্দা। যদিও পুজোর উদ্যোক্তাদের তরফ থেকে কিছুই জানানো হয়নি এই বিষয়ে।

প্রতি বছর বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন বেশ কিছু সংস্থা। সেরা প্রতিমা, সেরা প্যান্ডেল ছাড়াও বেশ কিছু বিভাগ থাকে। প্রতিটি বিভাগে সেরাকে বেছে নিয়ে পুরষ্কৃত করা হয়। প্রতি বছর সপ্তমীর দিন সকালে সেরা প্রতিযোগীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এই বছর সেই প্রতিযোগিতায় আশাপ্রদ ফল করতে পারেনি শিল্পী সনাতন দিন্দার হাতে তৈরি নলিন সরকার স্ট্রিটের পুজো। চূড়ান্ত পর্বে উন্নীত হওয়ার পরেও সেরার পুরষ্কার জিততে পারেনি উত্তর কলকাতার পুজোটি।

এর পরেই নিজের ফেসবুক পেজে সনাতন লিখেছেন, “নলীন সরকার স্ট্রিট সর্বজনীন দুর্গাপুজোর সবার কাছে, আপামর আমজনতার কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী…. আমি তাঁদের প্রত্যাশা পূরণ না করতে পারার জন্য। জয় দুর্গা।”

শিল্পীর এই পোস্টের পরেই সেখানে কমেন্টের বন্যা বয়ে গিয়েছে। সকলেরই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। শিল্পের কদর যে পুরষ্কার দিয়ে হয় না, সেই কথাই বলেছেন সকলে। 

একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “তোমার মূল্যায়ন শুধুমাত্র একটা পুরস্কার পাওয়া বা না পাওয়ার ওপর নির্ভর করে না ... তোমার নিজস্ব যাত্রাপথে যদি একটা মাইল ফলক না থাকে তাহলেও তো তোমার জার্নিটা বন্ধ হবে না আর মাইল ফলক দিয়ে তুমি তোমার জার্নির পরিমাপও করো বলে আমি মনে করি না ... তিন দশক ধরে তো দেখলাম।”

অন্য একজন লিখেছেন, “তোমার তুলনা শুধু তুমি, আমি জানি, তোমার বিচার করবে কে?” আরও একজন লিখেছেন, “প্রত্যাশা পুরষ্কার দিয়ে পূরণ হয় না। দু’চোখ ভরে পূরণ হয়েছে প্রত্যাশা”

এই বছর পুজোটি ৯৩ বছরে পদার্পণ করেছে। থিম ‘রূপান্তর’ অর্থাৎ ট্রান্সফর্মেশন। সমাজে নারী শক্তির রূপান্তরের গল্প তুলে ধরা হয়েছে থিমের মাধ্যমে। সারা বছর নলিন সরকার স্ট্রিট যে ভাবে চলা ফেরা করে। সাধারণ মানুষ সারা বছর যে ভাবে বসবাস করেন সেই ভাবনাও তুলে ধরা হয়েছে এ বছর। মহালয়ায় চক্ষুদান করে মায়ের মূর্তিকে চিন্ময়ী করে তুলেছিলেন সনাতন দিন্দা। দেবী এখানে অষ্টাদশী। আঠারো হাত নিয়ে নৃত্যরতা মূর্তি তৈরি করেছেন তিনি। 

২০১১ সালে নলিন সরকার স্ট্রিটে ঝুলন্ত দুর্গা বানিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন শিল্পী। ১৪ বছর পর ফিরেছেন পুরনো জায়গায়। মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহৃত হয়েছে স্থানীয় বাজার থেকে কেনা জিনিসপত্র। মণ্ডপে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সাতভাই চম্পা, ব্যাঙ্গমা, ব্যাঙ্গমি, লালকমল, নীলকমল। মণ্ডপের বাইরেই রয়েছে বাইবেল। অন্দরে পুরাণের নানা চরিত্ররা। একদিকে দেবকূল ও অন্যদিকে রাক্ষসরা।