রাজবাড়ির মন্দিরে মাঝ রাতে হঠাৎ নুপুরের শব্দ, দেরী না করে তখনই হল পুজোর আয়োজন
Kali Pujo 2025: তিন বছর আগের কথা। সেই দিন ছিলো জামাই ষষ্ঠী। সকাল থেকেই কালী মন্দিরে পুজো দেবার জন্য প্রচুর মানুষের ভিড়। সমস্ত কিছু শেষ করে ওই দিন মন্দির বন্ধ করতে একটু রাত হয়েছিল পুরোহিতের।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: তিন বছর আগের কথা। সেই দিন ছিলো জামাই ষষ্ঠী। সকাল থেকেই কালী মন্দিরে পুজো দেবার জন্য প্রচুর মানুষের ভিড়। সমস্ত কিছু শেষ করে ওই দিন মন্দির বন্ধ করতে একটু রাত হয়েছিল পুরোহিতের। রাত ১১টার পরে হঠাৎ করে নুপুরের আওয়াজ কানে আসে। ঘর থেকে বেড়িয়ে আওয়াজের উৎস খুঁজতেই নজর যায় মন্দিরের দিকে। এর পর ভালো করে কান পাততেই বোঝা যায় নুপুরের আওয়াজ আসছে মন্দিরের ভিতর থেকে। আর দেরি করা হয়নি। ওই রাতেই মন্দির খুলে নতুন করে মায়ের পুজো করা হয়েছিল। আর শুধু তাই নয়, মা যাতে মন্দির ছেড়ে এদিক ওদিক যেতে না পারেন তার জন্য তাঁর মূর্তি-সহ ডাকিনী, যোগিনীর পায়েও লোহার বেড়ি পরিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির জয়কালী মুর্তি এবং মন্দির বিষয়ে জানাতে গিয়ে কথাগুলি জানিয়েছিলেন রাজবাড়ির পুরোহিত শিবু ঘোষাল।
বৈকুন্ঠপুর রাজ এস্টেটের ইতিহাস অনুযায়ী জানা যায়, রাজা শীর্ষ সিংহ প্রথম তাঁর রাজধানী স্থাপন করেছিলেন সন্নাসীকাটা এলাকায়। যা বর্তমানে রাজগঞ্জ ব্লকে অবস্থিত। পরবর্তী সময়ে ওই রাজধানী সরিয়ে আনা হয় বোদাগঞ্জে। এই বিষয়ে জলপাইগুড়ির ইতিহাসবিদ উমেশ শর্মা জানান, বৈকুন্ঠপুর রাজ এস্টেটের রাজধানী বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়ছে। বোদাগঞ্জ থেকে রাজা দর্পদেব রায়কতের ছেলে জয়ন্তদেব রায়কত ১৭৯৩ - ১৮০০ সালের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো রাজধানী বোদাগঞ্জ থেকে সরিয়ে নিয়ে এসে জলপাইগুড়িতে নিয়ে আসেন। রাজধানী স্থানান্তরের সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল একাধিক দেবদেবীর মুর্তিও। কিন্তু এই অষ্টধাতুর জয়কালী মুর্তি কে প্রতিষ্ঠা করে ছিলেন তার সঠিক কোনো তথ্য আজও পাওয়া যায় না। শুধু তাই নয়, মুর্তির বয়স কত হয়েছে তা জানতে তার কোনো কার্বন টেস্ট করাও হয়নি। তবে ওই মুর্তিকে কেন্দ্র করে কিছু 'মিথ' বা গল্প শোনা যায়।
এবিষয়ে মন্দিরের পাশে দাঁড়িয়ে রাজপুরোহিত শিবু ঘোষাল বলেন, আগে কালী মন্দির ছিল বড় পুকুরের পাশে। পরে রাজকুমারী প্রতিভাদেবী স্বপ্নাদেশ পেয়ে ওই মুর্তি সরিয়ে বর্তমান জায়গায় নিয়ে আসেন। শিবু ঘোষাল জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই শুনেছি এই জয়কালী জাগ্রত। এমনকী রাজবাড়ি এই মন্দির থেকে করলা নদীর পার ধরে আড়াই কিলোমিটার দূরে দেবী চৌধুরানী কালী মন্দিরে মায়ের যাতায়াত ছিল বলেও শোনা যায়। অনেকেই মাকে সেখানে যেতে দেখেছেন। এমনকী রাতে যে সমস্ত লোকেরা এই মন্দিরে ঘুমাতেন তাঁদেরকে মায়ের হাতে মারও খেতে হয়েছে। তিনি নিজেও মন্দিরে নুপুরের শব্দের স্বাক্ষী বলে দাবি করেছেন।