সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার তাগিদ, এসএলভি সেন্ট্রাল পার্কের কালীপুজোর এ বারের থিম ‘গিভিং ব্যাক’
Kali Puja 2025: কর্মসূ্ত্রে বাড়ির বাইরে থাকলেও পুজোর সময় ঘরে ফিরে আসেন সকলেই। যাঁরা আসতে পারেন না, তাঁরা সেখানেই নিজেদের মতো তৈরি করে নেন বাড়ির ছোঁয়া।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: কর্মসূ্ত্রে বাড়ির বাইরে থাকলেও পুজোর সময় ঘরে ফিরে আসেন সকলেই। যাঁরা আসতে পারেন না, তাঁরা সেখানেই নিজেদের মতো তৈরি করে নেন বাড়ির ছোঁয়া। শহরের এক ছোটো মনোরম আবাসন এসএলভি সেন্ট্রাল পার্ক আজ বাঙালিয়ানার এক জীবন্ত প্রতীক হিসেবে উঠে এসেছে। কোভিড-পরবর্তী সময়ে কয়েকটি বাঙালি পরিবারের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল এক নতুন যাত্রা, ‘কালীপুজো উদযাপন’।
শৈশবের কালীপুজো নিয়ে নস্টালজিয়ায় ভরা ছিল তাঁদের মন। রাতভর প্যান্ডেল সাজানো, আতসবাজির ঝলক, আচারবিধিতে অংশগ্রহণ। সেই হারিয়ে যাওয়া অনুভূতিকে ফিরিয়ে আনতেই সমমনস্ক বাসিন্দারা একত্রিত হন। প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল প্রতিমা সংগ্রহ। দ্রুতই জানা যায়, হেব্বালে বসবাসরত (বর্তমানে সারজাপুরে) শিল্পী মুকুল পালের অনন্য কাজের প্রশংসা সর্বত্র। অপেক্ষা না করেই তাঁরা তাঁর কাছ থেকে প্রতিমা সংগ্রহ করেন।
এরপর আসে পুরোহিত নির্বাচন। কালীপুজোর কঠোর আচারবিধি মেনে চলা অপরিহার্য। বহু প্রচেষ্টার পর যোগাযোগ হয় সৌমিত্র বাবুর সঙ্গে হাস্যময়, নিষ্ঠাবান এই পুরোহিতমশাই পেশায় এক আইটি অ্যাডমিনও বটে। এ ছাড়া ১০৮টি জবা ফুল জোগাড়ের কাজও কম কঠিন ছিল না। তবু সমাজের সবার মিলিত প্রচেষ্টা সেই বাধাকে অতিক্রম করে সফলভাবে পুজোর রূপ দেয়।
প্রতি বছর এই পুজোর মূল লক্ষ্য থাকে সমাজের প্রতি কিছু ফিরিয়ে দেওয়া। এবারে পঞ্চম বর্ষপূর্তিতে সেই ভাবনাটিই আরও প্রমাণিত হবে ‘গিভিং ব্যাক’ থিমের মাধ্যমে। প্রতি বছরের মতো এই বছরও পুজো মণ্ডপের সন্নিকটেই থাকবে প্রবীণদের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য শিবির, ছোটদের জন্য জ্যোতির্বিজ্ঞান ক্লাব এবং বিভিন্ন স্বাদের ‘রোড সাইড ডেলিকেসি’ স্টল, যেখানে বাঙালি রোল ও বিরিয়ানির সুবাসে ভরে উঠবে পুজো প্রাঙ্গণ। গত বছর দৃষ্টিহীন শিশুদের জন্য বিশেষ ভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল। ডিজিটাল যুগে পুজোর উদ্যোগের কথা আরও মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে এবারের পুজোয় ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার করা হয়েছে আজকাল ডট ইন-কে।
দেশ-বিদেশ থেকে পুরনো আবাসিকরা এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত আছেন হৃদয়ে। ডেলাওয়্যারের শ্রীরূপ বা জার্মানির শুভজিৎ আজও সমানভাবে ভাগ করে নিচ্ছেন আনন্দের মুহূর্তগুলো। কমিটির অন্যতম সদস্য দেবজিৎ জানিয়েছেন, “এই পুজো শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, সমাজকে এক সুতোয় বাঁধার উৎসব।”
অন্যতম প্রধান আয়োজক ডাঃ শিবব্রত এই বিষয়ে বলেন, “আমরা এখানে সত্যিই ‘unity in diversity’-এর চর্চা করি, তবে স্বাদটা নিঃসন্দেহে বাঙালি।”