ছোটবেলায় পুজো এলেই দেশের বাড়ি যেতাম, সেই সময়টা ছিল একদম সিনেমার মতো: ঊষসী
Ushasi Ray: আজও উৎসবের গন্ধ ঊষসীকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় শৈশবে। ছোটবেলায় গ্রামের বাড়িতেই পুজো কাটাতেন নায়িকা।

ধারাবাহিক ‘গৃহপ্রবেশ’-এর প্রধান মুখ ঊষসী রায়। সারা বছর তাই বেজায় ব্যস্ত। শুটিং সেটের ‘লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন’-এর হাঁকডাকের মধ্যেই কেটে যায় সময়। অবসর যাপনের সময় প্রায় নেই বললেই চলে। তাই অধীর আগ্রহে উৎসবের দিন গোনা। দুর্গাপুজোর চারটে দিন কী ভাবে কাটবে তাঁর? খোঁজ নিল আজকাল ডট ইন।
শুটিংয়ের কারণে টানা এগারো মাস ছুটি পাননি ঊষসী। তাই পুজোর ছুটি যেন তাঁর কাছে উৎসবের উপহার। নায়িকার কথায়, “পঞ্চমী পর্যন্ত শুট করে ষষ্ঠীর দিন কলকাতার বাইরে বেড়াতে চলে যাচ্ছি। কয়েকটা দিন নিজের সঙ্গে সময় কাটাব।” পুজোর কলকাতার কথা কি একটু হলেও মনে পড়বে? হেসে তাঁর উত্তর, “প্রত্যেক বছর সপ্তমীটা কলকাতায় কাটিয়ে তারপর ঘুরতে যাই। এই বছর তার সুযোগ নেই। কারণ পুরো পুজো কাটিয়ে বেড়াতে গেলে আমার শুট শুরু হয়ে যাবে। তবে এই বছর কলকাতাকে মিস করার খুব একটা অবকাশ নেই। কারণ এই ছুটিটা আমার খুব প্রয়োজন ছিল। পরের বছর চুটিয়ে আনন্দ করে এ বছরেরটা পুষিয়ে নেব।”
পেশার খাতিরে সারা বছরই জামাকাপড় কিনতে হয়। পুজোর সময়ও কি ‘উইশ লিস্ট’-এ নতুন সংযোজন হয়? পর্দার শুভলক্ষ্মীর উত্তর, “সারা বছর আমি জামাকাপড় কিনতে থাকি। পুজোর জন্য আলাদা করে কেনাকাটা করিনি। বেড়াতে যাওয়ার জন্য প্রচুর জামাকাপড় কিনেছি। ধরে নিতে পারেন ওটাই পুজোর শপিং। তবে মা-বাবার জন্য পুজোর কেনাকাটা করেছি। বিশেষ করে মা-কে একটা সারপ্রাইজ দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।”
তন্বী চেহারা বজায় রাখতে সারা বছর ডায়েটের শাসন মানতে হয়। তবে বেড়াতে গিয়ে মোটেই সে সবকে তোয়াক্কা করবেন না ঊষসী। যেখানে যাচ্ছেন, সেখান স্থানীয় খাবার দিয়ে পেটপুজোর পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই সারা। তবে পুজোর ভোগ, পোলাও-লুচির কথা দূরে বসেও মনে পড়বে বৈকি!
অভিনয় জগতে পা রাখার পর থেকেই ঊষসীর পুজো কেটেছে চরম ব্যস্ততায়। কিন্তু আজও উৎসবের গন্ধ তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় শৈশবে। ছোটবেলায় গ্রামের বাড়িতেই পুজো কাটাতেন নায়িকা। বন্ধু, ভাইবোনদের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখতেন, নৌকা করে নদীতে বিসর্জন দেখতে যেতেন দলবল নিয়ে। কখন যে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসত, টের পাওয়ার জো ছিল না! ঊষসী বলেন, “২০০০ সালে আমার বাবার দিদা আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। আমার ডাক্তার দাদু তাঁর স্মৃতিতে প্রত্যেক বছর অষ্টমীতে ভোজ খাওয়ান। সামর্থ্য মতো খুব সামান্যই আয়োজন করা হত। কিন্তু সেই খাবারটাকে খেয়ে ওদের মুখে যে তৃপ্তির হাসি ফুটত, সেটা দেখার জন্য আমি সারা বছর অপেক্ষা করতাম। আবার নবমীর দিন আমাদের খামার বাড়িতে আমরা সবাই মিলে পিকনিক করতাম। ছোটবেলার পুজোর সঙ্গে যে কত স্মৃতি জড়িয়ে। একদম সিনেমার মতো।”
এখন ব্যস্ত রুটিনের মাঝে আর ‘দেশের বাড়ি’ যাওয়ার ফুরসত নেই। সময় নেই মামাবাড়ির আদর পাওয়ার। তবু ঊষসীর গ্রাম তাঁকে ডাকে। ডাকে শৈশবের স্মৃতি। নায়িকার কথায়, “আজ হয়তো অনেক কিছু আছে। আনন্দ করারও এখন কত রকম পথ খুলে গিয়েছে। শুধু ছোটবেলার ওই সহজ দিনগুলো আর রইল না।”