আমাদের বাড়ির পুজোয় শঙ্খ বাজানোর, লাল শাড়ি পরার প্রতিযোগিতা হয়, পুরস্কারও আছে: সোমা
Durga Puja 2025: পুরনো দিনের সাবেকি বাড়ির পুজো। চারটে দিন সকলের জন্য অবারিত দ্বার। হাজারও মানুষের সমাগম। ঠাকুর দর্শন করতে আসেন পাশের গ্রামের মানুষেরাও।

সারা বছর শুটিং নিয়ে ব্যস্ত। কলকাতার কোলাহলেই কেটে যায় দিন। তবে এই বছর পুজোয় শহর থেকে শহরতলিতে বাস অভিনেত্রী সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ডানকুনিতে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। ধুমধাম করে করে দুর্গাপুজো হয় সেখানে। তারই তোড়জোড়ে দম ফেলার ফুরসত থাকে না। আজকাল ডট ইন-কে তিনি বলেন, “এটি আসলে পরিবারের শরিকি পুজো। এই বছর আমাদের পালা। আমি তো অধিকাংশ সময় শুটিং নিয়েই ব্যস্ত থাকি। আমার কর্তাই সবটা সামলান। আগে তো এসবের জন্য মিটিং হত। এখন ফোনে-ফোনেই সবটা করে ফেলতে হয়। আমাদের বাড়িতে পঞ্জিকা দেখে, সব রীতিনীতি মেনে চলে মায়ের পুজো।”
পুরনো দিনের সাবেকি বাড়ির পুজো। চারটে দিন সকলের জন্য অবারিত দ্বার। হাজারও মানুষের সমাগম। ঠাকুর দর্শন করতে আসেন পাশের গ্রামের মানুষেরাও। আলো, ঢাকের বাদ্যি, ধূপ-ধুনোর গন্ধে তৈরি হয় উৎসবের মন্তাজ। সোমার কথায়, “সারা বছর আমরা যে যার মতো কাজে ব্যস্ত থাকি। পুজোর এই কয়েকটা দিন মান-অভিমান ভুলে পরিবারের সকলে একসঙ্গে আনন্দ করি। শরিকি পুজোয় অনেক ধরনের ঝামেলা থাকে। মনোমালিন্য হয়। আমি বলি, পুজোর এই ক’টা দিন সব সরিয়ে রেখে মেতে উঠতে। কত মানুষ আসেন আমাদের বাড়িতে। আমার মেয়েরাও আসে। গমগম করে চারদিক। এমন অভিজ্ঞতা এখন খুব বিরল।”
সোমার বাড়ির পুজোয় দেবীর ভোগে থাকে খিচুড়ি, এঁচোড়, চালতার চাটনির মতো রকমারি পদ। সঙ্গে থাকে নানা ধরনের নাড়ু, লুচি, ভাজাভুজি এবং আরও অনেক কিছু। পরিবারের সদস্য ও অতিথিদের জন্যও থাকে ভরপুর ভোজনের আয়োজন। জলখাবারে পরিবেশিত হয় লুচি, আলুর দম ও বোঁদে। দুপুরে থাকে মাছের বিভিন্ন বাহারি পদ-সহ রকমারি বাঙালি খাবার। সন্ধ্যায় গরম গরম তেলেভাজার সঙ্গে মুড়ি দিয়ে চলে দেদার আড্ডা।
সোমাকে দেখতেও নেহাত কম ভিড় নয়। যাঁরা দর্শন করতে আসেন, তাঁদের অনেকেই অভিনেত্রীর অনুরাগী। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান, ছবি তুলতে চান। অনুরাগীদের ফেরান না সোমাও। তাঁর কথায়, “প্রচুর মানুষ এসে আমার সঙ্গে সেলফি তুলতে চান। কথা বলতে চান। আমি সকলের সঙ্গে কথা বলি। ছবি তুলি। এক সময় খুব বিড়ম্বনায় পড়তাম। এখন অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। মানুষ এত ভালবাসেন। এর থেকে বেশি আর কী-ই বা চাইতে পারি!”
উৎসবের দিনে বিনোদনেরও ঘাটতি থাকে না। পুজোর চারটে দিন চলে নানা ধরনের প্রতিযোগিতা। অভিনেত্রী বলেন, “আমরা পুজোর দিনগুলোতে নানা ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করি। শঙ্খ বাজানোর প্রতিযোগিতা, গাঁয়ের মেয়েরা কে কত ভাল করে লাল পাড় সাদা শাড়ি পরতে পারে, তারও প্রতিযোগিতা হয়। যাঁরা অংশগ্রহণ করেন, তাঁদের পুরস্কারও দেওয়া হয়। সবাই সানন্দে মেতে ওঠেন।”
দশমীতে ঠাকুর বিসর্জনের আগে নিয়ম মেনে হয় সিঁদুরখেলা। সোমা বলেন, “আমাদের বাড়ির রীতি অনুযায়ী বউরা লাল পাড় বেনারসি পরে সিঁদুর খেলে। নাকে থাকে নথ। সেই দৃশ্য যেন সিনেমা! এখন তো আমি ভ্লগিংও করি। এবার সেখানেও কিছুটা আমাদের পুজোর ঝলক তুলে ধরব।”