বিদেশের মাটিতেই তৈরি হয় দুর্গাপ্রতিমা, রান্না হয় ভোগ! পুজোর চারটে দিন জার্মানির এরলাঙ্গেন জুড়ে উৎসবের আমেজ
Durga Puja 2025: দুর্গাভিলের এই পুজো আয়োজিত হয় বাঙালি পঞ্জিকা মেনে। আয়োজনের দায়িত্ব ভাগ হয়ে যায় সবার মধ্যে । কেউ থাকেন মণ্ডপ সাজানোর কাজে, কেউ ভোগ রান্নায়, আবার কারও দায়িত্ব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করা।

— বাধন কুমার দাস, এরলাঙ্গেন, জার্মানি
বাঙালি আর দুর্গাপুজোকে কি আলাদা করা সম্ভব? ঢেঁকি যেমন স্বর্গে গিয়েও ধান ভাঙে, তেমনি বাঙালি পৃথিবীর যে প্রান্তেই যাক না কেন, তার প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজোকে ভুলতে পারে না। তাই প্রতি বছর মায়ের আগমনের সময় ঘনিয়ে এলেই দেশ-বিদেশে শুরু হয়ে যায় পুজোর প্রস্তুতি। সুদূর জার্মানির ছোট্ট শহর এরলাঙ্গেনও পিছিয়ে নেই আনন্দময়ীর আগমনের আয়োজনে। এরলাঙ্গেন দুর্গাভিলের আয়োজিত দুর্গাপুজো এবারে পঞ্চম বছরে পা রাখল। এখানে উৎসবে মেতে ওঠেন শুধু প্রবাসী বাঙালিরাই নন, অন্যান্য ভারতীয়রাও।
দুর্গাভিলের এই পুজো আয়োজিত হয় বাঙালি পঞ্জিকা মেনে। আয়োজনের দায়িত্ব ভাগ হয়ে যায় সবার মধ্যে । কেউ থাকেন মণ্ডপ সাজানোর কাজে, কেউ ভোগ রান্নায়, আবার কারও দায়িত্ব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করা। তবে বিদেশে পুজোর অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হল প্রতিমা জোগাড় করা। দুর্গাভিলের পুজোর প্রতিমা জার্মানিতেই বানিয়েছেন এই পুজোর অন্যতম আয়োজক দীপঙ্কর সরকার । কলকাতার থিম পুজোর অনুকরণে এখানেও সাজানো হয় পুজো প্রাঙ্গণ। আগেরবার কাঠ, কাগজ ও থার্মোকল দিয়ে তৈরি হয়েছিল প্রাচীন রাজবাড়ি; এবারে সাজসজ্জায় ব্যবহার হয়েছে বাংলার পটচিত্র। ষষ্ঠী থেকে দশমী প্রতিদিন ভক্তদের জন্য থাকছে নানা রকম প্রসাদ। দেশি-বিদেশি অসংখ্য মানুষ ভিড় জমান এই উৎসবে। পুজো প্রাঙ্গনে বসেছে ফুচকা আর পাপড়ি চাটের স্টল । এছাড়াও ছোট বড় সবার জন্য আয়োজন করা হয়েছে ছবি আঁকা, শঙ্খ বাজানো, প্রদীপ জ্বালানো ইত্যাদি মজার প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
কয়েক দিনের এই উৎসব আনন্দে-হইচইয়ে ভরে তোলে প্রবাসী বাঙালি এবং ভারতীয়দের মন। দশমীতে সিঁদুর খেলা শেষে মাকে বিদায় জানানোর দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ভাঙা মণ্ডপে বসেই আবার শুরু হয়ে যায় পরের বছরের প্রস্তুতি। ভেসে আসে চিরন্তন সেই আশার ধ্বনি —'আসছে বছর আবার হবে'।