'অনেককিছু মনে করিয়ে দেয় ওই শহরটা...' অনুপম রায়ের কাছে বেঙ্গালুরুর পুজোর গন্ধ কেমন? নস্টালজিয়ায় ভেসে কী বললেন গায়ক?
Anupam Roy: বেঙ্গালুরুতে বহু বছর কাটানোর ফলে সেখানকার শারদের সঙ্গে বেশ পরিচিত অনুপম। বেঙ্গালুরুর দুর্গাপুজো তাঁর কাছে নস্টালজিয়া।

সঙ্গীত জগতে পা দেওয়ার আগে পুরোদস্তুর কর্পোরেট ছিলেন অনুপম রায়। সংবাদমাধ্যমের কাছে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এই কথা নিজেই জানিয়েছিলেন গায়ক। বরাবরের মেধাবী ছাত্র অনুপম। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। এরপর বেঙ্গালুরুতে চাকরির সুযোগ। সেই চাকরি হঠাৎ ছেড়ে দিয়ে গানকে নিজের পেশা হিসেবে বেছে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে। এরপর নানা ওঠা পড়ায় দর্শকের মনে পাকাপাকি ভাবে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
তবে বেঙ্গালুরুতে বহু বছর কাটানোর ফলে সেখানকার শারদের সঙ্গে বেশ পরিচিত অনুপম। বেঙ্গালুরুর দুর্গাপুজো তাঁর কাছে নস্টালজিয়া। অনুপমের চোখে কেমন ছিল বেঙ্গালুরুর দুর্গোৎসব? আজকাল ডট ইন-কে গায়ক বলেন, "বেঙ্গালুরু আমার কাছে সব সময় নস্টালজিয়া। অনেককিছু মনে করিয়ে দেয় ওই শহরটা। কত রাত জাগা, কত বন্ধুদের আড্ডা, কত মন খারাপ, আনন্দ, সবকিছুই।"
অনুপম রায়ের কথায়, "ওখানকার পুজোগুলো খুব ছিমছাম। কলকাতার পুজোর যে আমেজ সেটা হয়তো নেই। তবে বাঙালিদের ঐক্যতা চোখে পড়ার মতো। কলকাতার প্রতিটা ঘরে যেমন জানে পুজোর গন্ধ এসেছে। ঠিক তেমনই বেঙ্গালুরুর প্রতিটা বাঙালি পাড়া, বাঙালি সোসাইটি জানে পুজো এসেছে।"
তিনি আরও বলেন, "কেরিয়ার যখন মোড় নিল, তখন অনুষ্ঠান ছাড়া আর বেঙ্গালুরুর পুজোয় তেমনভাবে যাওয়া হয়নি। কারণ, সত্যি বলতে কী পুজোয় অনুষ্ঠানের পর, আর সময় থাকে না। খুব মনে পড়ে ২০১৮ সালটা। তখন প্রথমবার পুজোয় বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেই পুরনো পুজো প্যান্ডেল, পুরনো বন্ধুদের দেখে আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। যে প্যান্ডেলগুলোয় এক সময় ঘুরতাম, সেখানে পারফর্ম করাটা খুব অন্যরকম অনুভূতি। সেবার তো প্রচুর লোক হয়েছিল অনুষ্ঠানে। ভিড়ের চোটে পুলিশও নাজেহাল হয়ে পড়েছিল। বরাবরই বেঙ্গালুরুর পুজোয় আমার কাছে খুব কাছের।"
অনুপম রায়ের কাছে পুজো মানে কি শুধুই 'গান'-এ কাটানো? গায়কের জবাব, "পুজো মানে এখন শুধুই অনুষ্ঠান। কারণ, এটাই একদিক থেকে আমার ভাললাগা, ভালবাসার জায়গা। তাই পুজোয় ব্যস্ত থাকতেই বেশি ভাল লাগে। তাছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াই, অনুষ্ঠান করি। এটাই তো বড় পাওয়া।"
প্রসঙ্গত, বাঙালির দুর্গোৎসব মানেই শুধু কলকাতার অলিগলি, ঠাকুরঘর আর থিমপুজোর ঝলক নয়। এবার সেই পরিধি ছাপিয়ে যাচ্ছে সুদূর বেঙ্গালুরু পর্যন্ত! প্রথমবারের মতো এই শহরের পুজোগুলিকে জাতীয় মঞ্চে স্বীকৃতি দিতে চলেছে ‘শারদ গৌরব পুরস্কার ২০২৫’। আয়োজক আজকাল ডট ইন।
বেঙ্গালুরুতে বর্তমানে প্রায় দু’শোর বেশি দুর্গাপুজো হয়। বহুমাত্রিক থিম, সৃজনশীলতার ঝলক আর প্রবাসী বাঙালির আবেগ - এই তিনে মিলে প্রতিটি মণ্ডপ হয়ে ওঠে অনন্য শিল্পকর্ম। কিন্তু এতদিন এই বর্ণাঢ্য আয়োজন, অনুষ্ঠানের স্বীকৃতি সীমাবদ্ধ ছিল স্রেফ স্থানীয় পরিসরে। ‘শারদ গৌরব’ সেই সীমারেখা ভেঙে কলকাতাসহ গোটা দেশের বাঙালির সামনে তুলে ধরবে বেঙ্গালুরুর দুর্গোৎসবের ঐশ্বর্য।