দুর্গাপুজোয় ‘রাণী ভবানী’ হয়ে মানুষের কাছে আসছি! এত ভালবাসাই উৎসবের সবচেয়ে বড় উপহার: রাজনন্দিনী
Durga puja 2025: ‘রাজরাজেশ্বরী রাণী ভবানী’ বর্তমানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। আর সেই জনপ্রিয়তার সঙ্গে রাজনন্দিনীর কাঁধে গুরুদায়িত্বও এসেছে বটে।

অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছরের পুজো রাজনন্দিনী পালের কাছে একটু অন্য রকম। একটু বেশি ভাললাগার। আবার ব্যস্ততারও। কয়েকমাস আগে শুরু হওয়া তাঁর ধারাবাহিক ‘রাজরাজেশ্বরী রাণী ভবানী’ বর্তমানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। আর সেই জনপ্রিয়তার সঙ্গে নায়িকার কাঁধে গুরুদায়িত্বও এসেছে বটে। উৎসবের মরশুমের তাই অনেকটা জুড়েই থাকবে কাজ। দুর্গাপুজোর চারটে দিন কেমন কাটবে অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী দত্তের কন্যার?
আজকাল ডট ইন-কে রাজনন্দিনী জানান, পঞ্চমী পর্যন্ত ব্যস্ত থাকবেন ধারাবাহিকের শুটিং নিয়ে। তারপর ছুটি। তাতে যদিও বিশ্রামের অবকাশ নেই। ছোটপর্দার অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকার কথায়, “ছুটি বলতে আমরা যা বুঝি, পুজোর সময়টা আমার সেরকম কাটবে না। অষ্টমী পর্যন্ত শহরের বাইরে নানা জায়গায় অনুষ্ঠান করতে যাব। সেখানকার মানুষদের সঙ্গে তাই অনেকটাই সময় কাটবে বলে আশা করছি। সেটাও আমার কাছে প্রাপ্তি। তাই এত কাজের মাঝে আলাদা কোনও পরিকল্পনা নেই।”
সারা বছর শুটিং সেটের ‘লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন’-এর হাঁকডাকের মাঝেই দিন কেটে যায়। খোশগপ্প করার সুযোগ কোথায়! ব্যস্ত শিডিউলের চাপে আড্ডার আসরও এখনও অতীত। পুজোর কয়েকটা দিন তাই রাজনন্দিনীর কাছে ‘ক্ষতিপূরণ’-এর অবকাশ। ‘রাণী ভবানী’ বললেন, “পুজোর শপিং আমায় টানে না। পেশার খাতিরে সারা বছরই কিছু না কিছু কিনি। শুধু পরিবারের মানুষদের জন্য অনলাইনে কেনাকাটা সেরে ফেলি। কারণ দোকানে-দোকানে ঘোরার সময় নেই। সবচেয়ে বেশি আমায় যেটা টানে, তা হল, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটানো। অনেক বন্ধু বিদেশ থেকে আসে। আমি সময় বার করে ওদের সঙ্গে দেখা করি। আড্ডা দিই। সারা বছর আমার দিদার সঙ্গেও সেভাবে দেখা হয় না। এই সময়টা ওঁর কাছে যাই। সময় কাটাই।”
আড্ডা যেমন আছে, পুজোর ক’টা দিন কি ডায়েটের শাসন পেটপুজোতেও মন দেন রাজনন্দিনী? একগাল হেসে উত্তর, “আমি সারা বছর কড়া ডায়েট করি না। যা ইচ্ছা হয়, তা-ই খাই। ফলে পুজোয় খাওয়াদাওয়া নিয়ে আলাদা করে কোনও উন্মাদনা নেই। কারণ ভালমন্দ খাওয়াটা আমার রোজকার জীবনের অংশ। বললে অনেকেই বিশ্বাস করবেন না। কিন্তু বিরিয়ানির জন্য আমি খুনও করে ফেলতে পারি। তাই পুজোয় ওটা চাই-ই চাই।”
পুজো নিয়ে রাজনন্দিনীর উচ্ছাস যেমন আছে, তেমনই মনে বাসা বেঁধেছে উদ্বেগ। মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টিতে ভেসেছে কলকাতা। নানা জায়গা থেকে মিলেছে প্রাণহানির খবরও। উৎসবের আগে এহেন দুর্যোগের কারণে মন ভারাক্রান্ত নায়িকার। তিনি বললেন, “গতকাল যা হল, তা দেখে খুব খারাপ লাগছে। এই উৎসবের সঙ্গে কত মানুষের রুজিরুটি জড়িয়ে। আমার নিজেরও তা-ই। এই দুর্যোগের কারণে কত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেন। অনেকের মৃত্যু পর্যন্ত হল। এগুলো ভাবলেই মনটা কেমন ভারী হয়ে আসছে।”
রাজনন্দিনী তবু মনে করেন ‘দ্য শো মাস্ট গো অন’। যাবতীয় খারাপ লাগাকে সরিয়ে তাই পুজোর শোয়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত নায়িকা। তিনি মনে করেন, ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তা যেন দর্শকের কাছে তাঁর দায়বদ্ধতা আরও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে। তাঁর কথায়, “আমার ধারাবাহিকের কারণে মানুষ আমায় আরও বেশি ভালবাসছেন। রাস্তাঘাটে আমায় দেখলে কথা বলতে আসছেন। আশীর্বাদ করছেন। একজন শিল্পীর এর থেকে বেশি আর কী-ই বা চায়! এটাই আমার উৎসবের উপহার। তাই আমারও দায়িত্ব অনেকটা বেড়ে গিয়েছে বলে মনে হয়। তাই এই বছর সকলের কাছে ‘রাণী ভবানী’ হয়ে পৌঁছে যাব। সেরকম ভাবেই সব জায়গায় প্রচার করেছি। উৎসবের চারটে দিন সকলের ভালবাসার জন্য মুখিয়ে থাকব।”