কলকাতায় বৈভবের মাঝে আন্তরিকায় ভাটা, মফস্বলের পুজোয় কোনও দিন তার কমতি দেখিনি: অনির্বাণ

Anirban Chakrabarti: সারা বছর কাজের ব্যস্ততায় ডুবে থাকলেও, গত কয়েকটি পুজোয় অনির্বাণের ব্যস্ততার পারদ খানিকটা নেমে এসেছিল। ফলে শুটিং বা প্রচারের ঝক্কি না থাকায় মন দিয়েছিলেন ভ্রমণে।

Anirban Chakrabarti speaks about his puja plan

শহুরে ভিড়ভাট্টা, কোলাহলে তাঁর মন বসে না। দুর্গাপুজোতে তাই কলকাতায় থাকেন না অনির্বাণ চক্রবর্তী। একেনের মতো কোনও রহস্য উন্মোচনের জন্য নয়, বরং নিছক অবসর যাপনের আশায় ব্যাগপত্র গুছিয়ে যাত্রা করেন নতুন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। তবে এবার আর তেমন হচ্ছে না। শহরে থেকেই উৎসবের আনন্দে মজবেন অভিনেতা। আজকাল ডট ইন-কে তিনি বলেন, “আসলে কোথাও বেড়াতে গেলে অনেক আগে থেকেই সেই পরিকল্পনা সেরে রাখতে হয়। টিকিট কাটতে হয়। এবার ব্যস্ততার কারণে সেই সব আর করে ওঠা হয়নি। কয়েক বছর ধরে পুজোটা বাইরে কোথাও কাটালেও এই বছর কলকাতাতেই থাকব।”

সারা বছর কাজের ব্যস্ততায় ডুবে থাকলেও, গত কয়েকটি পুজোয় অনির্বাণের ব্যস্ততার পারদ খানিকটা নেমে এসেছিল। ফলে শুটিং বা প্রচারের ঝক্কি না থাকায় মন দিয়েছিলেন ভ্রমণে। কিন্তু এ বছর স্বাদ বদলের পালা। ‘একেন বাবু’র কথায়, “বেড়াতে না যাওয়ায় এই বছর পুজো পরিক্রমা, পুজোর আড্ডা নিয়ে ব্যস্ত থাকব। এই সুযোগে অনেকগুলি মণ্ডপও ঘুরে ফেলা যাবে। এমনিতে আমার পুজোর ভিড়ভাট্টা খুব একটা পছন্দ নয়। তাই আলাদা করে কখনও সেভাবে ঠাকুর দেখতে যাওয়া হয় না। কাজ বাদে বাকি সময়টা বাড়িতেই থাকব। বিশ্রাম নেব। সারা বছর ধরে জমিয়ে রাখা বই, পুজোবার্ষিকী পড়ে দিব্যি কাটিয়ে দেব।”

দুর্গাপুজোয় ডায়েটের শাসন ভেঙে পেটপুজোয় মন দেন বহু তারকা। অনির্বাণও কি তাই? কিছুটা হেসে অভিনেতার উত্তর, “আমার তো সারা বছর এত কড়া ডায়েট চলে না যে সেটা আলাদা করে পুজোর সময় ভাঙতে হবে। তাছাড়া আমি খুব একটা খাদ্যরসিক নই। রেড মিট তো একেবারেই খাই না। মাছটা খেতে ভালবাসি। তবে পুজোর সকালে জলখাবারে গরম গরম লুচির সঙ্গে ছোলার ডাল, আলুর দম বা সাদা আলুর তরকারি পেলে মন্দ নয়। মিষ্টি আমার না-পসন্দ। কিন্তু বিজয়ার পর গুড় দিয়ে তৈরি নারকেল নাড়ু চাই।”

অনির্বাণের শৈশব কেটেছে বজবজে। মফস্বলে। আড়ম্বর নয়, সেখানকার উৎসবে তিনি মিশে থাকতে দেখেছেন প্রবল আন্তরিকতা। উৎসবের কথা বলতে গিয়ে অতীত ফিরে দেখেন অভিনেতা। বলেন, “ছোটবেলায় মফস্বলের পুজোই বেশি দেখেছি। কলকাতায় হয়তো একটা দিন আসতাম ঠাকুর দেখতে। আমার চোখে দুই পুজোতেই আন্তরিকতা আছে। তবে এটা ঠিক যে, কলকাতার পুজোয় বৈভবের কারণে তাতে কিছুটা ভাটা পড়ে। কিন্তু মফস্বলে এত আড়ম্বড় না থাকলেও আন্তরিকতায় কমতি নেই।”

এখানেই থামলেন না অনির্বাণ। আরও কিছুটা এগিয়ে গেলেন নস্টালজিয়ার পথে। বললেন, “এখন পেশার খাতিরে সারা বছরই জামাকাপড় কিনতে হয়। তাই পুজোয় আলাদা করে কিছু কিনি না। অথচ ছোটবেলায় কে কী জামা দিল, ক’টা জামা হল গুনতে বসতাম। দশমী পর্যন্ত নতুন জামা হবে কি না হিসেব করতাম। জুতো কেনারও কী আগ্রহ! বন্ধুদের সঙ্গে নতুন জামা-জুতো পড়ে এ পাড়া থেকে ও পাড়া ছুটে বেড়াতাম। আর ছিল পুজোর সময় পুজোবার্ষিকী পড়ার নিখাদ আনন্দ। সেই সময়টা আর নেই। কিন্তু স্মৃতিগুলো আছে।”