পুজোয় অতিথি আপ্যায়নে থাকুক এই মিষ্টি, জানুন বাড়িতেই বানানোর সহজ পদ্ধতি
শুধু বনেদি বাড়িতে কেন, আপনিও তৈরি করতে পারেন একটি মিষ্টির পদ যা দিয়ে মা দুর্গাকে বরণ করে নিতে পারেন, সঙ্গে আবার নিজেরাও দশমীর শুভেচ্ছা বিনিময়ে আনন্দে মেতে উঠুন। ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত সন্দেশ, পান্তুয়া, কালাকাঁদের মতো শুকনো মিষ্টি প্রচুর খাওয়া হল। দশমীতে তবে রসের মিষ্টি হয়ে যাক।তাই এখানে দেওয়া হল কমলাভোগের রেসিপি,যা পুজোর দিন সহজেই বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন।
আজকাল ওয়েব ডেস্কঃ অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে সন্ধিপূজা করা হয়। ঠাকুমা দিদিমাদের কথা অনুযায়ী, সন্ধিপূজার পরই উমার মুখের উজ্জ্বলতা কেমন যেন ম্লান হয়ে আসে।মায়ের মনেও বিষাদের সুর। কারণ দশমীতে মায়ের যাওয়ার পালা। কষ্টে সকলেরই মন ভার হয়ে যায়। বিজয়া দশমীতে
উমাকে বিদায় জানানোর পালা। কিন্তু এই বিজয়া দশমী মোটেই দুঃখের নয় বরং আরও একটি বছরের অপেক্ষার আনন্দ।তাই সকলে মিলে মাকে মিষ্টিমুখ করিয়ে বিদায় জানানোই রীতি।
উৎসবের দিনগুলিতে মিষ্টির চাহিদা থাকে তুঙ্গে।বিদায়ের সময় উমাকে যেমন মিষ্টি দিয়ে বরণ করা হয়, তেমনি শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময়ও একে অপরকে মিষ্টি মুখ করানো হয়।আর বাঙালির যখন তখন মিষ্টি খাওয়ার অভ্যেস রয়েছে। শুধুমাত্র বাড়িতে নিজের হাতে তৈরি করা নানা ধরনের মিষ্টি ও নাড়ু দিয়ে ঘরের মেয়েকে বিদায় জানানোর রীতি এখনো রয়েছে অনেক বনেদি বাড়ির পুজোয়।
শুধু বনেদি বাড়িতে কেন, আপনিও তৈরি করতে পারেন একটি মিষ্টির পদ যা দিয়ে মা দুর্গাকে বরণ করে নিতে পারেন, সঙ্গে আবার নিজেরাও দশমীর শুভেচ্ছা বিনিময়ে আনন্দে মেতে উঠুন।
ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত সন্দেশ, পান্তুয়া, কালাকাঁদের মতো শুকনো মিষ্টি প্রচুর খাওয়া হল। দশমীতে তবে রসের মিষ্টি হয়ে যাক।তাই এখানে দেওয়া হল কমলাভোগের রেসিপি,যা পুজোর দিন সহজেই বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন।
কমলাভোগ তৈরি করার উপকরণ:
ফ্যাট ফ্রি দুধ ২ লিটার, কমলালেবুর রস ২ কাপ, জাফরান, বেকিং পাউডার আধ চামচ, আইসিং কিইব সুগার ২ চামচ, সুজি ১ চামচ, অরেঞ্জ এসেন্স ২ ফোঁটা (কমলালেবুর রস থাকলে প্রয়োজন নেই)।
রসের জন্য : চিনি ৩ কাপ, জল ৫ কাপ, এলাচ গুঁড়ো ও জাফরান ১ চামচ।
প্রনালী:
৪ কাপ জলের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে ফোটাতে থাকুন।ঘন হয়ে এলে আরও ১ কাপ জল দিয়ে ফুটতে দিন।রসের ঘনত্ব বুঝে গ্যাস বন্ধ করে দিন। একটি বড় হাঁড়িতে দুধ জ্বাল দিন।কয়েকবার ফুটে উঠে ঘন হলে গ্যাস বন্ধ করে দিন। দুধের হাঁড়ি ঠান্ডা করতে দিন।পুরু সর পড়ে গেলে তা খুব সাবধানে দুধ থেকে উঠিয়ে আলাদা পাত্রে সরিয়ে রাখুন।মাঝারি আঁচে আবার দুধ জ্বালে বসান।একবার ফুটে উঠলেই গ্যাস বন্ধ করে অল্প অল্প করে কমলার রস দিন আর নাড়তে থাকুন।দুধে দই বা ছানা ভাব এলে বুঝবেন মিশ্রণ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। খেয়াল রাখবেন ছানা যেন বেশি শক্ত হয়ে না যায়।
এবার একটি বড় ছড়ানো থালায় ছানা নিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট মথে মসৃণ করে মেখে নিন। ছানার মধ্যে একটা ভেজা ভেজা ভাব থাকবে।তারপর এটি ১০-১৫ মিনিট ঢেকে রেখে দিন। অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব মনে হলে দু'চামচ ময়দা দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে মেখে নিন।ছানার সেই মন্ড থেকে ছোট ছোট গোলা তৈরি করুন। গোল আকৃতির মিষ্টি তৈরি করে তার মাঝখানে আঙুল চেপে একটু ছোট গর্তের মত তৈরি করে নিন। প্রতিটি মিষ্টির গর্তে একটি করে লবঙ্গ গেঁথে দিন।কয়েকটি পেস্তা কুচি লবঙ্গের চারপাশে দিয়ে ফুলের মতো তৈরি করুন। মিষ্টির চারপাশে একটু করে জাফরান ছিটিয়ে দিন। সাবধানে সাজাতে হবে যেন ফেটে না যায়।এবার টিস্যু পেপার দিয়ে কয়েক মিনিট ঢেকে রাখুন।
এবার পালা মিষ্টিকে রসে দেওয়ার।চিনির রসে এলাচ গুঁড়ো দিয়ে অল্প কিছুক্ষণ জ্বাল দিয়ে নিন। সুগন্ধ বেরোলে এই রসে একটি একটি করে কমলাভোগ খুব সাবধানে ছেড়ে দিন। কড়াই বা হাঁড়ি আলতোভাবে এ পাশে ওপাশে ঘুরিয়ে ভারী ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। কিছুক্ষণ পর ঢাকনা খুলে বেশি আঁচে ১০ - ১৫ মিনিট জ্বাল দিন। জ্বাল দিয়ে গ্যাস বন্ধ করে ৩০ মিনিট ঢেকে রাখুন। এবার ঢাকনা খুলে ঠান্ডা হতে দিন। তারপর পাত্রে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
দশমীর দুপুরে লুচি ও ছানার ডালনার সঙ্গে বাড়িতে তৈরি কমলাভোগ অতিথিদের পাতে পড়লেই পুজোর খাওয়া সম্পূর্ণ।