আলোকসজ্জায় চন্দননগরের কুশীলবরা, থাকবে বাংলা ব্যান্ড, আসবেন মুম্বইয়ের শিল্পীরা, ভিড় সামলাতে এই পুজোয় থাকবেন ১০০ জন নিরাপত্তারক্ষী
Kali Puja 2025: উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় বাজেটের কালী পুজোর আয়োজন করতে চলেছে আলিপুরদুয়ার জংশন রেলওয়ে কন্ট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশন। বরাবরের মতো এবছরও বিগ বাজেটের পুজো আয়োজন করে সমগ্র উত্তরবঙ্গে তাক লাগাতে চলেছে বলেই উদ্যোক্তাদের দাবি।

প্রকাশ মণ্ডল, আলিপুরদুয়ার
উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় বাজেটের কালী পুজোর আয়োজন করতে চলেছে আলিপুরদুয়ার জংশন রেলওয়ে কন্ট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশন। বরাবরের মতো এবছরও বিগ বাজেটের পুজো আয়োজন করে সমগ্র উত্তরবঙ্গে তাক লাগাতে চলেছে বলেই উদ্যোক্তাদের দাবি। এবছর ২৭ তম বর্ষে তাদের পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে আলিপুরদুয়ার জংশন রেল ডিভিশনের স্টেডিয়ামের মাঠে।
আগে এই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে দীপাবলি উপলক্ষে বাজি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হত। এরপর শুরু হয় ফানুষ উৎসব। সেই সময় আলিপুরদুয়ার জেলার হাজার হাজার মানুষ সেই উৎসবে ভিড় জমাতেন। তবে বিগত তিন বছর ধরে সেই উৎসব আর নেই। প্রশাসনের নির্দেশে বেশ কিছু বাজি পটকা নিষিদ্ধ হওয়ার পর বাজি উৎসব বন্ধ করে দেন উদ্যোক্তারা। তার পরিবর্তে শুরু হয় বড় বাজেটের কালী পুজোর আয়োজন। বিগত বছরে 'গোল্ডেন টেম্পেল' এবং 'পার্লামেন্ট হাউস'-এর থিম তৈরি করে সমগ্র উত্তরবঙ্গ এমনকী পাশের রাজ্য অসমেরও নজর কাড়ে আলিপুরদুয়ার জংশন রেলওয়ে কন্ট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশন। ছ'দিন ধরে চলে এক অন্য ধরনের উৎসব। প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষ এই পুজো দেখতে ডিআরএম মাঠে ভিড় করেন।
আরও পড়ুন: লম্বায় ১২০ ফুট, চওড়ায় ১৭০ ফুট, শ্রীকৃষ্ণের দ্বারকা যেন এবার উঠে আসবে বারাসতে
সেই ঐতিহ্য বজায় রেখে এবারও উত্তরবঙ্গ তথা সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে সাড়া ফেলতে চলেছে আলিপুরদুয়ারের এই কালীপুজো। জানা গিয়েছে এর জন্য ব্যয় হবে কয়েক কোটি টাকা। উল্লেখ্য, পুজো দেখতে শুধু উত্তরবঙ্গের বাসিন্দারাই নয়, আসেন অসমের বাসিন্দারাও।
বাঁশ, কাঠ, ফাইবার প্লেট, প্লাস্টার অফ প্যারিস ও গোল্ডেন ডাস্ট দিয়ে তৈরি হচ্ছে এই পুজোর প্যান্ডেল। স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশী বোলপুর থেকে এই কাজের জন্য বিশেষ শিল্পী এনে প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। মণ্ডপের মূর্তি তৈরির ভার দেয়া হয়েছে আলিপুরদুয়ার রাজেশ পাল নামে এক মৃৎ শিল্পীকে। যার তৈরি করা মূর্তিকে সম্প্রতি দুর্গা পুজোয় জেলার সেরা মূর্তি হিসেবে পুরস্কার দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এর পাশাপাশি মণ্ডপ-সহ আশপাশের এলাকা নানারকম ঝলমলে আলো দিয়ে সাজিয়ে তুলবে হুগলি চন্দননগরের আলোক শিল্পীরা।
অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাদশা রায় জানান, 'প্রতি বছরের মতো এবছরও আমরা 'বিগ' বাজেটের কালী পুজোর আয়োজন করতে চলেছি। বিগত বছরগুলিতে মানুষ যেভাবে আমাদের আয়োজনে সাড়া দিয়েছেন, সেটা দেখে উৎসাহীত হয়েই এবারও আমরা উত্তরবঙ্গ তথা অসমের দর্শকদের এক অভিনব মন্ডপ উপহার দেব। এবারের থিম ভেলোরের 'লক্ষী নারায়ণী গোল্ডেন টেম্পেল'। এই মন্দির সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। যারা শুনেছেন, কিন্তু দেখতে পারেন নি তাঁদের জন্যই আমরা সেই মন্দিরের একটি অবিকল মণ্ডপ তৈরী করতে চলেছি। আমাদের বিশ্বাস, প্রতিবারের মতো এবছরও লক্ষ লক্ষ মানুষ পুজো মণ্ডপ ভিড় করবেন। সেই কারণে পুজো প্রাঙ্গণের পরিস্থিতি সামাল দিতে বা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাউন্সারের পাশাপাশি একশোর বেশি বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়াও পুলিশের নিরাপত্তাও থাকবে। কালীপুজো ২০ অক্টোবর থেকে শুরু। তবে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার দর্শনার্থীদের চাহিদায় আগামী ১৮ অক্টোবর থেকেই এই পুজো মণ্ডপ উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।'
পুজোর উদ্বোধনের দিন থেকেই পুজো প্রাঙ্গণ শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক মঞ্চে দর্শকদের মন মাতাবে একটি বাংলা ব্যান্ড। আসবেন মুম্বাইয়ের শিল্পীরা। এক কথায় পুজোর ক'টাদিন আলিপুরদুয়ার জংশন অফিস এলাকায় চলবে এক অন্য ধরনের উৎসব।