ডাউহিলে পা রেখেই কেমন অদ্ভুত মনে হচ্ছিল, গা ভারী হয়ে গিয়েছিল: ঐশ্বর্যা

Kalipuja 2025: ভূত দেখিনি বটে। তবে আমি এনার্জিতে বিশ্বাসী। অর্থাৎ আমি মনে করি, পৃথিবীতে খারাপ শক্তি যেমন আছে, তেমনই ভালও আছে।

Aishwaria Sen speaks about her horror experience

মাত্র কয়েক দিন আগের কথা। হইচইয়ের ‘ভূত তেরিকি’-তে কাজ করলাম। পর্দায় অভিনয়ের সুবাদে ভূত নিয়ে তখন অদ্ভুত চর্চা হয়েছে বটে! দেখতে দেখতে আবার ভূত-চতুর্দশীও এসে পড়ল। সময় গড়িয়ে গেল কিছুটা। তবু ভূত নিয়ে আমার আগ্রহে ভাটা নেই।  আমাকে অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন, আমি ভূত দেখেছি কি না বা আমার ঝুলিতে টানটান কোনও ‘সত্যিকারের’ ভূতের গল্প আছে কি না। কিন্তু ক্ষুদ্র এ জীবনে অ্যাকশনের অভাব না থাকলেও ফিকশনের অভাব বড়ই বেশি। তাই সকলকে নিরাশ করেই বলতে হয় যে, নাহ, এ জনমে আর ভূতের দেখা পাইলাম না!

ভূত দেখিনি বটে। তবে আমি এনার্জিতে বিশ্বাসী। অর্থাৎ আমি মনে করি, পৃথিবীতে খারাপ শক্তি যেমন আছে, তেমনই ভালও আছে। তবে খারাপটার আঁচ পেলে গায়ে কাঁটা দেয় বৈকি! একবার উত্তরবঙ্গের ডাউহিলে গিয়েছিলাম। রিলের সুবাদে এই জায়গার নাম এখন সকলেরই জানা। সেখানে বলিউডের ‘রাজ’ ছবির শুটও হয়েছিল। যাই হোক, একটা মিউজিক ভিডিও শুটে সেখানে যাওয়া। কিন্তু জায়গাটায় পা রাখতেই কেমন যেন গা ভারী হয়ে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল খারাপ কোনও শক্তি সেখানে আছে! নেগেটিভ এনার্জির আঁচ পেলে আমার শরীরও তা জানান দেয়। কেন, তার উত্তর নেই। আমার অদ্ভুত অস্বস্তি হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, কিছুই যেন ঠিক নেই। সে দিন নিজের ভূত হয়তো দেখিনি। কিন্তু যা অনুভব করেছিলাম তাকে অনায়াসেই ভুতূড়ে বলা যায়।

ছোট থেকে নানা সময় শুনেছি অনেক জায়গায় নাকি ভূত থাকে। দিনের যেখানে আলোয় ভরা, রাতে সেখানে তাদের গা ছমছমে রাজত্ব। সেই সব জায়গায় সাহস করে অভিযান চালালেই নাকি ‘তেনাদের’ দেখা মেলে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে এখনও আমি বঞ্চিত। তবে নেগেটিভ এনার্জির আঁচ পেলেই আমি কেমন যেন বদলে যাই। আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। কাছের মানুষদের সঙ্গে ঝগড়া করি। হাজার চেষ্টাতেও নিজেকে ঠিক রাখতে পারি না। তখন নিজেকে ঠিক রাখতে অনেক ঝক্কি! শুধু সেই জায়গা ছেড়ে চলে এলেই রাতারাতি সব ঠিক, তা নয়। পজিটিভ ভাবতে হয়। যে ভগবানে বিশ্বাস করি, তাঁর কাছে প্রার্থনা করি। আমি বরাবর পজিটিভ এনার্জিতে চোখ বুজে বিশ্বাস করি। আমি যদি চাই আমি ঠিক হব, তা হলে ঠিক হতে বাধ্য। তার প্রমাণও পেয়েছি। ভূত বা ভগবান, কাউকেই আমি দেখিনি। কারা আছে, কী ভাবে আছে আমি জানি না। তবে পৃথিবীতে ভাল আর খারাপের অস্তিত্ব সমান ভাবে থাকবে সেটুকু জানি।

এত ভূত-ভূত করে শেষে আসি ভূতের রাজার কথায়! যাকে ঘিরে ছিল আমাদের শৈশব, তার কথা না বললে কি চলে! তার দেখা পেলে কিন্তু ভয় পেতাম না। বরং সুযোগ বুঝে চেয়ে নিতাম তিনটে বর। আমার মতো পেটুক মানুষ সবার আগে চাইবে পৃথিবীর নানা জায়গা ঘুরে নানা ধরনের ভাল ভাল খাবার খেতে। তাই সেটা তালিকায় রাখলাম। আর চাইব আমার কাছের মানুষগুলো যাতে খুব ভাল থাকে। আমার জন্য ওরা গর্ববোধ করুক। দুঃখ নয়। আর চাই এই পৃথিবীতে যত খারাপ আছে, তা যাতে মুছে যায়। মানুষের মধ্যে ফিরে আসে মনুষ্যত্ব। কারণ মনুষ্যত্ব-হীন মনই হল সবচেয়ে বড় ভূত।