কোজাগরী পূর্ণিমায় মৃত সারমেয়র ছবিকেই পুজো করেন সুকন্যা

২০১০ সালে ব্যাঙ্গালোরে যান কর্পোরেটে চাকরি পেয়ে। ২০১১ সালে ব্যাঙ্গালোরে রাস্তার ধারে আহত অবস্থায় এক সারমেয়কে দেখতে পান তিনি। সময় নষ্ট না করে ব্যাঙ্গালোর শহরের এক পশু হাসপাতালে আহত কুকুরটিকে নিয়ে যান কলকাতার সুকন্যা । সেই পশু হাসপাতালেই তার চোখে পড়ে ''ম্যাগি "। প্রথম দেখাতেই ম্যাগিকে দত্তক নিয়ে কলকাতা ফিরে আসেন সুকন্যা দে।

Kolkata Woman Honors Late Dog with Yearly Lakshmi Pooja
Kolkata Woman Honors Late Dog with Yearly Lakshmi Pooja
Kolkata Woman Honors Late Dog with Yearly Lakshmi Pooja
Kolkata Woman Honors Late Dog with Yearly Lakshmi Pooja
Kolkata Woman Honors Late Dog with Yearly Lakshmi Pooja

তীর্থঙ্কর দাস: আসনের সামনে আঁকা আলপনা, জ্বলছে প্রদীপ,  সামনে রাখা নৈবেদ্য ও ভোগের মিষ্টি। পুজোর সমস্ত উপকরণ পরিপাটি করে সাজানো। কেবল আসনে রয়েছে মৃত সারমেয়র ছবি। সেই ছবিতেই মালা দিয়ে চলছে মন্ত্রোচ্চারণ। এইভাবেই প্রতিবছর কোজাগরী পূর্ণিমা উদযাপন করেন সুকন্যা। 

কলকাতার বাসিন্দা সুকন্যা দে বর্তমানে মধ্যমগ্রামে পোষ্যদের একটি শেল্টার হোম চালান।

২০১০ সালে ব্যাঙ্গালোরে যান কর্পোরেটে চাকরি পেয়ে। ২০১১ সালে ব্যাঙ্গালোরে রাস্তার ধারে আহত অবস্থায় এক সারমেয়কে দেখতে পান তিনি। সময় নষ্ট না করে ব্যাঙ্গালোর শহরের এক পশু হাসপাতালে আহত কুকুরটিকে নিয়ে যান কলকাতার সুকন্যা । সেই পশু হাসপাতালেই তার চোখে পড়ে ''ম্যাগি "। প্রথম দেখাতেই ম্যাগিকে দত্তক নিয়ে কলকাতা ফিরে আসেন সুকন্যা দে।

 ২০১২ সাল থেকেই লক্ষ্মী পুজোর দিন 'ম্যাগিকেই' লক্ষ্মী রূপে পুজো করে আসছেন।  তিনি জানিয়েছেন ওরাও তো কারোর বাড়ির মেয়ে আর লক্ষ্মী মানেই মেয়ে সে পশু হক বা পাখি। সবটাই মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে। তিনি আরও বলেন, 'প্রচুর সমালোচনার মুখে পড়েছি এবং আগামীতেও পড়বো কিন্তু তা বলে কি আমি আমারই বিস্তৃত সংসার ছেড়ে চলে যাবো? কখনোই না। হয়তো ম্যাগি না আসলে আমার জীবনে বদল আসতো না, আমি হয়তো ওদের পাশে থাকার কথা ভাবতে পারতাম না। ম্যাগির অবদান সবচেয়ে বেশি আমার জীবনে।' চোখে জল নিয়ে বললেন, 'আমি জানি এই পৃথিবীতে না হলেও অন্য কোথাও ওর সঙ্গে আমার দেখা হবে'।

তিনবছর হল আজ তাঁর পোষ্য 'ম্যাগি' নেই। এখন তার ছবিতেই ফুল মালা দিয়ে কোজাগরী পূর্ণিমায় পুজো করেন সুকন্যা। 

সব পোষ্যের মালিকরাই বলে থাকেন, যাঁর পোষ্য, তিনিই বোঝেন তাঁর সঙ্গে পোষ্যর সম্পর্ক কেমন। তৃতীয় ব্যক্তির পক্ষে সেই সম্পর্কের তল পাওয়া কঠিন। কোজাগরী পূর্ণিমায় নিজের কন্যাসমা পোষ্যটিকে পুজো করে কম কটু কথা শুনতে হয়নি সুকন্যাকে।  কিন্তু ওই যে বললাম,  পোষ্যর সঙ্গে তার মালিকের সম্পর্কের গভীরতা তৃতীয় ব্যক্তির পক্ষে বোঝা বড় কঠিন। আর ঠিক সেই কারণেই হয়তো আজও মৃত পোষ্যর ছবি সামনে রেখে কোজাগরী পূর্ণিমায় পুজো করে আসছেন সুকন্যা।