সিডনির পুজোতেও হাজার হাজার লোকের সমাগম, জমজমাট পুজোর চারদিন

কথায় বলে তিন বাঙালি এক হলেই একটা দুর্গাপুজো শুরু করে। কথাটা ভুল নয়। সিডনি শহরে এখন ২১টি দুর্গাপুজো হয়। তার মধ্যে অন্যতম বড় পুজো এবং দক্ষিণ গোলার্ধের প্রথম দুর্গাপুজো বেঙ্গলি এসোসিয়েশন অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের পুজো।

Durga Puja 2024 Sydney Bengali association of new south Wales Durga Puja gnr

আজকাল ওয়েবডেস্ক: কথায় বলে তিন বাঙালি এক হলেই একটা দুর্গাপুজো শুরু করে। কথাটা ভুল নয়। সিডনি শহরে এখন ২১টি দুর্গাপুজো হয়। তার মধ্যে অন্যতম বড় পুজো এবং দক্ষিণ গোলার্ধের প্রথম দুর্গাপুজো বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের পুজো। এই কমিটির এ বছর ৫০ বছর পূরণ হল। যাদের পথচলা শুরু হয়েছিল ১৯৭৪ সালে। মাত্র ন'টি বাঙালি পরিবারকে নিয়ে। আর তার ঠিক দুই বছর পরেই ১৯৭৬ সালে শুরু হয় দুর্গাপুজো। 

বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের সদস্য আজ ৫০০-র বেশি পরিবার। তাই পুজোর ভার আর ধার দুটোই বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। সিডনিতে উৎসব বা উত্তরণের মতো জনপ্রিয় এবং বড় পুজো যেমন আছে, তেমনই আছে আরোহণ, স্বাগতম, বা সিডনির কালীবাড়ির পুজো। সব মিলিয়ে সিডনিতে প্রায় কুড়িটা পুজো হয়েছে এবার। তবু বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের পুজো সবার প্রাণের পুজো। ভিড় তাই এখানে প্রতিদিন।

প্রবাসে নিয়ম নাস্তি। তাই বিদেশের নিয়ম মেনে ২০২২ সাল পর্যন্ত পুজো হতো সপ্তাহান্তে, মাত্র দু'দিন। গত বছর থেকে পুজো হচ্ছে চারদিনেরই। তার উপর আছে প্রাক পুজোর আনন্দমেলা। বাঙালি মানে দেদার খাওয়াদাওয়া। আর সেই খাওয়ার আনন্দমেলা যাতে সুচারুভাবে করা যায়, তাই ভাড়া করা হয়েছিলো মূল হলের বাইরের মাঠ। পুজো শুরুর আগে সিডনির বাঙালি হইহই করে খেয়েছে বিরিয়ানি, ফিশফ্রাই, মাটন চপ, ঘুগনি। 

আগে পুজো হতো কনকর্ড গার্লস স্কুলে। সময়ের প্রয়োজনে পুজো সরেছে নতুন ঠিকানায় অবার্ন স্পোর্টস কমপ্লেক্সে। বড় জায়গা, দেদার পার্কিং। তাই যোগদান আর উৎসাহ অসীম। শনি, রবি তো কোন ছার, বৃহস্পতি বা শুক্রবারের মতো কাজের দিনেও লোকের অভাব নেই। অনেকেই ছুটি নিয়েছেন উৎসবে গা ভাসাতে।

অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি সুদীপ সিনহা জানিয়েছেন, পাঁচদিনের পুজোয় এবার লোক হয়েছিল ছয় হাজারের বেশি। এই বিপুল জনসমাগম সামলানো, প্রসাদ ও ভোগ বিতরণ করা সামান্য কাজ নয়। আর সেই কাজটি সমিতির স্বেচ্ছা সেবক সদস্যরা করেছে খুব দক্ষতার সঙ্গেই।

সিডনির পুজোর একটা বড় দিক যে এখানে প্রচুর অবাঙালি ভারতীয়, এবং ভারতীয় শ্বেতাঙ্গদের চোখে পড়ার মতো উপস্থিতি। পুজোর ফল প্রসাদ আর ভোগের জন্য সবাইকেই একই লাইনে দাঁড়াতে হয়। যে সব দিনে হাজার দেড় দুই লোক আসেন, সে সব দিনেও একই নিয়ম। 

এবারের পুজো প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান কোষাধ্যক্ষ শম্পা দস্তিদার বলেছেন, 'পুজোর আয়োজন ও পরিকল্পনায় সকলে একটা পরিবার হয়ে উঠেছিল। আর সব থেকে যেটা ভাল দিক, নতুন প্রজন্ম, যাদের অনেকেই বড় হয়েছে এই বিদেশের মাটিতে, তারাও ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এই আয়োজনের সঙ্গে। এটা একটা বড় পাওনা এই পুজোর।'