হাতির হানা থেকে বাঁচতে শুরু দেবীর আরাধনা, গ্রামের মূল উৎসব গজলক্ষ্মীর পূজা
Kojagari Laxmi Puja:এই পূজার সঙ্গে সাধারণ লক্ষ্মী পূজার তফাৎ আছে। বেশ কিছু নিয়মকানুন সম্পূর্ণ আলাদা।
আজকাল ওয়েবডেস্ক: এই গ্রামে দুর্গাপূজা হয় না। লক্ষ্মীর আরাধনা হয়। সেই লক্ষ্মীকে ডাকা হয় গজলক্ষ্মী নামে। কারণ, দেবীর বাহন এখানে প্যাঁচা নয়, হাতি। তাই তাঁকে বলা হয় গজলক্ষ্মী। বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় রেঞ্জের জঙ্গলঘেরা গ্রাম রামকানালিতে লক্ষ্মীই হলেন মূল আরাধ্যা দেবী।
পূজার নেপথ্যে আছে বিশেষ কারণ। হাতির অত্যাচার থেকে মুক্তি পাওয়া। একসময় বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের রামকানালি গ্রাম ছিল একেবারেই জঙ্গল ঘেরা। ফসল ফলিয়ে স্বস্তি পাওয়া যেত না। দিন-রাত হানা দিত হাতির পাল। আবার কখনও ফসলের জমি ছেড়ে ঢুকে পড়ত গ্রামের ভিতরেও। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন গ্রামবাসীরা। কারণ, গ্রামের অধিকাংশ লোকের জীবিকা চাষবাস। অথচ ফসল ফলিয়ে সে ফসল ঘরে উঠবে কিনা তা নিয়ে নিশ্চিত থাকা যেত না। পালে পালে হাতি লণ্ডভণ্ড করে দিত ক্ষেত। লক্ষ্মী থাকত অধরা।
ফলে লোকজন ঠিক করেন লক্ষ্মীর আরাধনা করবেন। তাঁর কাছে প্রার্থনা করবেন হাতির অত্যাচার থেকে বাঁচাতে। সেই হিসেবে আজ থেকে প্রায় ১২৬ বছর আগে হাতিকে লক্ষীর বাহন করে গজলক্ষ্মী নামে লক্ষ্মীর আরাধনা শুরু করেন রামকানালির বাসিন্দারা। এটাই হয় তাঁদের গ্রামের প্রধান উৎসব। ফলে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার দিন তাঁদের বাড়িতে আসেন আত্মীয়রা। গ্রামের বাইরে যারা থাকেন তাঁরাও এই উপলক্ষে ফিরে আসেন। তিন-চারদিন ধরে চলে উৎসব। তবে এই পূজার সঙ্গে সাধারণ লক্ষ্মীপূজার তফাৎ আছে। বেশ কিছু নিয়মকানুন সম্পূর্ণ আলাদা।