রাজা নেই, রাজবাড়িতে তাঁর চালু করা দুর্গাপূজা হয় স্থানীয়দের আর্থিক অনুদানে

Durga Pujo 2025: সেই আমলের রীতিনীতি মেনেই মালদার চাঁচল রাজবাড়ীর দুর্গাপুজো আজও প্রায় ৩৫০ বছরের পুরনো প্রথা মেনেই চলে আসছে। ইতিমধ্যে এই পুজো নিয়ে শুরু হয়েছে জোর প্রস্তুতি। বর্তমানে চাঁচল ট্রাস্টি বোর্ডের তদারকিতে রয়েছে রাজবাড়ীর এই দুর্গাপুজো। মহালয়ার দেবীপক্ষ থেকেই এই পুজোর উৎসব শুরু হয়ে যায়। এই রাজবাড়ীর দেবী দুর্গাচন্ডী রূপে সিংহবাহিনী হয়ে বিরাজ করছেন।

Durga Puja of Chanchal Rajbari now run by locals
এই রাজবাড়ীর দেবী দুর্গাচন্ডী রূপে সিংহবাহিনী হয়ে বিরাজ করছেন।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: নেই রাজা। কিন্তু পড়ে আছে রাজবাড়ি। তিনি চালু করেছিলেন দুর্গাপুজো।‌ সেই আমলের রীতিনীতি মেনেই মালদার চাঁচল রাজবাড়ীর দুর্গাপুজো আজও প্রায় ৩৫০ বছরের পুরনো প্রথা মেনেই চলে আসছে। ইতিমধ্যে এই পুজো নিয়ে শুরু হয়েছে জোর প্রস্তুতি। বর্তমানে চাঁচল ট্রাস্টি বোর্ডের তদারকিতে রয়েছে রাজবাড়ীর এই দুর্গাপুজো। মহালয়ার দেবীপক্ষ থেকেই এই পুজোর উৎসব শুরু হয়ে যায়। এই রাজবাড়ীর দেবী দুর্গাচন্ডী রূপে সিংহবাহিনী হয়ে বিরাজ করছেন। সেই আমলের রীতি মেনে চাঁচল রাজবাড়ী বলে পরিচিত পাহাড়পুর চন্ডীমন্ডপে আজও কৃষ্ণা নবমী থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর তোড়জোর। 

উল্লেখ্য, চাঁচল মহকুমার চাঁচল শহরে এই রাজবাড়ি অবস্থিত। এই চাঁচল রাজবাড়ির একাংশে রয়েছে মহকুমা অফিস , চাঁচল মহকুমা আদালত এবং চাঁচল কলেজ। আর এক প্রান্তে রয়েছে রাজবাড়ীর বাকি অংশ।সেখানেই ধুমধাম করে অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপুজো। 

বর্তমানে চাঁচল রাজবাড়ি ট্রাস্টি বোর্ডের স্থানীয় পর্যবেক্ষক দেবজয় ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ট্রাস্টি বোর্ড ও রাজ্য সরকারের সহযোগিতা এবং স্থানীয়দের আর্থিক অনুদানেই বর্তমানে এই রাজবাড়ির দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কৃষ্ণা নবমী থেকেই এই রাজবাড়ীর পুরোহিত ভোলা পান্ডে পুরনো নিয়ম মেনেই পুজোর প্রস্তুতি শুরু করেছেন। 

স্থানীয় প্রবীনদের কথায়, প্রায় ৩৫০ বছর আগে রাজা রামচন্দ্র রায়চৌধুরী সেখানকার সতীঘাটে স্নান করতে গিয়ে অষ্টধাতুর চন্ডীরূপী দেবী দুর্গার একটি মূর্তি পান। এরপর স্বপ্নাদেশ পেয়ে রাজ বাড়িতেই সেই চন্ডিরূপী এই মূর্তিটিকে দেবী দুর্গা রূপে পুজো শুরু করেন রাজা রামচন্দ্র রায় চৌধুরী। তাঁর উত্তরসূরিরাও বংশ পরম্পরায় এই পুজো করে আসছেন। পরবর্তী সময়ে চাঁচল রাজা শরৎচন্দ্র রায়চৌধুরী এই পুজোর দায়িত্ব পান। রাজা শরৎচন্দ্র রায়চৌধুরী নিঃসন্তান ছিলেন । ফলে তাঁর আর উত্তরসূরি না থাকায় বর্তমানে ট্রাস্টি বোর্ডের হাতেই চাঁচল রাজবাড়ী চলে যায়। বহু বছর আগে চাঁচলের রাজা শরৎচন্দ্র রায়চৌধুরী পাকাপাকিভাবে চাঁচল রাজবাড়ীর পাহাড়পুর চন্ডীমণ্ডপটি গড়ে তুলেছিলেন। যেখানে আজও দুর্গা পূজোর পাশাপাশি কুমারী পুজো হয়ে থাকে। কুমারী পুজোর দিন দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষের সমাগম হয় । এছাড়াও দুর্গা পুজোর দিনগুলিতে পংক্তি ভোজনের আয়োজন করা হয়। স্থানীয়দের কথায় ভক্তিভরে চন্ডীরূপী সিংহবাহিনী দেবী দুর্গাকে পুজো দিলে সমস্ত মনস্কামনা পূরণ হয়। তাই আজও দুর্গা পুজোর অষ্টমী নবমীতে চন্ডী রূপে এই দেবী মূর্তিকে দেখতে অসংখ্য ভক্তরা ভিড় করেন।