এবার পুজোয় সুরের মূর্ছনায় ভাসতে হলে দেখতে যেতে হবে বালার্ক সংঘের 'সুরের সেতু'

আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্যান্ডেল নয়, যেন আস্ত একটা গিটার, লতা মঙ্গেশকরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এবার 'সুরের সেতু' ভাসাবে সুরের মূর্ছনায়
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ৫৯ তম বর্ষে এবছর মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর শহরের অন্যতম বিখ্যাত দুর্গাপুজো বালার্ক সংঘের পুজোর থিম 'সুরের সেতু'। ভারতরত্ন কোকিলকন্ঠী লতা মঙ্গেশকরকে সম্মান জানিয়ে পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা এবছর এই থিম বেছে নিয়েছেন।
জেলার দুর্গাপুজোর মানচিত্রে বরাবরই বিখ্যাত মুর্শিদাবাদের বিষ্ণুপুর কালীবাড়ি এলাকার বালার্ক সংঘ। প্রতিবছরই বিভিন্ন রকমের থিমের পুজো করে জেলাবাসীকে তারা চমক দেয়। গত বছর তাদের তৈরী 'রাজস্থানের রাজপ্রাসাদ' দেখার জন্য মানুষের ঢল নেমেছিল বহরমপুর শহরে। থিম পুজোর ধারা অব্যাহত রেখে এবছর বালার্ক সংঘের পুজো উদ্যোক্তারা বেছে নিয়েছেন 'সুরের সেতু' ভাবনাকে।
বালার্ক সংঘ দুর্গা পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা তথা ক্লাবের সম্পাদক অমিত গুহ পাট্টাদার বলেন,' প্রয়াত কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকরকে সম্মান জানিয়ে এবছর পুজোর থিম হিসেবে আমরা 'সুরের সেতু' ভাবনাকে বেছে নিয়েছি। দুর্গাপুজোর গোটা প্যান্ডেলটাই হবে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের 'রেপ্লিকা' ব্যবহার করে। মূল প্যান্ডেলটা দেখতে হবে গিটারের মতো, যার উচ্চতা প্রায় ৬৭ ফুট । মণ্ডপটি চওড়ায় প্রায় ৪২ ফুট। '
তিনি বলেন, 'মন্ডপের ভেতর প্রবেশ করলে দর্শনার্থীরা মাতৃ প্রতিমার সঙ্গে দেখতে পাবেন বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র। মন্ডপকে বাদ্যযন্ত্র দিয়ে সাজিয়ে তোলার জন্য বাঁশ-বেত ও অন্যান্য বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে তানপুরা ,গিটার ,তবলা-সহ আরও বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট বাদ্যযন্ত্র। সেগুলো দিয়েই মন্ডপের ভেতরের অন্দরসজ্জা করা হবে।'
পুজোর উদ্যোক্তারা জানান, এবছর উল্টো রথের দিন খুঁটি পূজার মধ্যে দিয়েই প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের এক বিখ্যাত ডেকরেটর সংস্থার কর্মীরা দিনরাত অনলস পরিশ্রম করে 'সুরের সেতু' থিমের বাস্তবায়ন করছেন।
বালার্ক সংঘের দুর্গা পুজোর প্রতিবছরেরই অন্যতম আকর্ষণ থাকে আলোকসজ্জা। জেলার নামী আলোকশিল্পীরা এই পুজোর জন্য তৈরি করছেন আলোর ঝর্ণাধারা। পুজোর দিনগুলোতে প্যান্ডেল থেকে প্রায় ৫০০ মিটার পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের আলোক সজ্জায় সাজানো হবে গোটা এলাকা।
অমিতবাবু বলেন,'থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ভারতের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পীর বিভিন্ন ধরনের গান এবং যন্ত্রসঙ্গীতে তাঁর গাওয়া গানের সুরের মূর্ছনায় ভেসে যাবে পুজো প্যান্ডেল।'
বালার্ক সংঘের দুর্গা প্রতিমা বরাবরই সাবেকি ধাঁচের হয়ে থাকে। জেলার অন্যতম বিখ্যাত প্রতিমাশিল্পী উজ্জ্বল নাথের হাতে এবছর তৈরি হচ্ছে ক্লাবের মাতৃ প্রতিমা।
অমিতবাবু জানান, 'থিমের প্যান্ডেল করলেও বরাবরই আমাদের ক্লাবে সাবেকি প্রতিমা তৈরী করা হয়। বনকাপাসী-ডাকের সাজে সেজে উঠবে দুর্গা প্রতিমা এবং তাঁর ছেলেমেয়েরা।'
বালার্ক সংঘ ক্লাবের দুর্গা পুজোর অন্যতম আকর্ষণ পুজোর অষ্টমীর দিন পাড়ার সকলের জন্য ভোগ খাওয়ার ব্যবস্থা। ক্লাবের কর্তারা জানান, অষ্টমীর দিন প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে খিচুড়ি এবং আলুর দম খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। সকাল ১১ টা থেকে সন্ধ্যা ছটা পর্যন্ত ক্লাবে আগত প্রায় সকলকে প্রসাদ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। এবছরও সেই ব্যবস্থা থাকবে বলে উদ্যোগতারা জানিয়েছেন। এছাড়াও পুজোয় প্রতিদিন থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা।
পুজো কমিটির সম্পাদক অমিতবাবু বলেন, 'গত বছর প্রশাসন এবং বিভিন্ন সংস্থার দেওয়ার একাধিক পুরস্কার জিতেছিল আমাদের ক্লাব। আমরা আশাবাদী এবছরের থিমও সকলের ভালো লাগবে এবং আমাদের ঝুলিতে আবার সেরার সম্মান জুটবে।'