কেন কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গে এত বৃষ্টি? কীসের ইঙ্গিত? ভাসবে কি পুজো?

কিন্তু সেই আশা যেমন নিরাশা হল একই সঙ্গে নাগরিক সমাজও বিপর্যস্ত হল বর্ষার প্রকোপে। রাজ্যে বর্ষার ঋতুটা পার হয়ে গেলেও বৃষ্টি যেন ছাড়তেই চাইছে না বাংলাকে। 

Weather Update: what is IMD forecast before the Durga Puja 2025
পুজোতেও বৃষ্টির ভ্রুকূটি। ফাইল চিত্র।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: নতুন বছরের সূচনা হওয়ার পরপরই বর্ষাকালের আগমন। বলাবাহুল লোক গ্রীষ্মের পরই আসে বর্ষাকাল প্রতি বারের মতো এই বছরও তার অন্যথা কিছু নয়। আর এই বর্ষার দিকেই তাকিয়ে থাকে চাষিরা তাদের ফসল আরও উন্নত হবে এই আশায়। কিন্তু সেই আশা যেমন নিরাশা হল একই সঙ্গে নাগরিক সমাজও বিপর্যস্ত হল বর্ষার প্রকোপে। রাজ্যে বর্ষার ঋতুটা পার হয়ে গেলেও বৃষ্টি যেন ছাড়তেই চাইছে না বাংলাকে। 

এ যেন খানিক জেদি এক ছোট্ট মেয়ে বৃষ্টি, যার বায়না মিটছে না আর সেই জন্যই সে কোন ভাবে ছেড়ে যেতে চাইছে না, ব্যাপারটা খানিকটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে মনে হচ্ছে। আরো বিড়ম্বনার বিষয়, বিগত এক দশকে অর্থাৎ ১০ বছরে এমন বর্ষা দেখা যায়নি। এমনটাও জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। 

বলাবাহুল্য, এই বৃষ্টি নামের মেয়েটি কোনভাবেই ছেড়ে যেতে চাইছে না, তার দাবি পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত। কিন্তু কি তার দাবি এবং কি চায় এই বৃষ্টি মেয়েটি তা আবহাওয়া দপ্তরের ও বুঝতে গোলকধাঁধা লেগে যাচ্ছে। একই সাথে নিম্নচাপের যে বারবার ফিরে আসা সেটাও যথেষ্টই উদ্বেগ জনক হয়ে উঠেছে বঙ্গবাসীর জন্য। 

আরও পড়ুন: পুজোর মাসে ভাসবে বাংলা? সেপ্টেম্বরের শুরুতেই বড় ঘোষণা হাওয়া অফিসের, জানুন আবহাওয়ার লেটেস্ট আপডেট

এই অধিক বৃষ্টিপাত এবং নিম্নচাপ নিয়ে কারণ দর্শাতে গিয়ে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ভারতের মধ্যভাগ হল আবহাওয়া অর্থাৎ মুনসুনের কোর রিজিয়ান, সেই সময় মধ্যভারতে যদি বৃষ্টিপাত ঠিক মতো হয় কিংবা স্বাভাবিক এর থেকে বেশি বৃষ্টি হয় তাহলে উত্তর-পূর্ব ভারতে ও উত্তরবঙ্গ ও সিকিম সহ জায়গাগুলিতে বৃষ্টিপাত কম হয় (উইক মনসুন কন্ডিশন), বলা যায় মোটামুটি স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু তার উল্টোটা হলেই বিপরীত ধর্ম পালন করে আবহাওয়া।

এছাড়াও, উত্তরে যে নিম্নচাপ রেখাটি রয়েছে তা যদি উত্তরের দিকে বয়ে চলে যায় হিমালয় পাদদেশের দিকে, তাহলে পাহাড়ি এলাকায় বা উত্তরের দিকে বৃষ্টি বেশি হয়, এটাই স্বাভাবিক নিয়ম প্রকৃতির। কিন্তু এবার সেই নিম্নচাপ রেখা উত্তরের দিকে না গিয়ে দক্ষিণে রয়ে যাওয়ার কারণে উত্তরের দিকে (উত্তরবঙ্গ) বৃষ্টির পরিমাণ এ বছর অনেকটাই কম এবং বৃষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে দক্ষিণবঙ্গের দিকে। বলা বাহুল্য এক প্রকার অস্বাভাবিক দৃষ্টি এই প্রাকৃতিক অনিয়মের কারণে। 

আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিকর্তা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস আরও জানিয়েছেন, এবছর ১১ থেকে ১২ টি অলরেডি নিম্নচাপ ঘটে গিয়েছে। এখনো নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না যে আরো নিম্নচাপ আসবে না। তবে আগামী সপ্তাহে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরের দিক থেকে আরও একটি নিম্নচাপের সৃষ্টি হতে পারে, তবে তা বাংলায় যথেষ্ট প্রভাব পরবেই এমনটা বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। তবে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির প্রবণতা কমবেশি থাকবে। তবে পুজোর সময়ের আবহাওয়ার কথা এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না, সাত দিন আগে জানিয়ে দেওয়া হবে। এমনটাই পরিষ্কার জানিয়েছেন আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিকর্তা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস।