প্রাচীন রীতি মেনে কোচবিহারে বড় দেবী মায়ের সপ্তমীর পূজা, দেবীকে নিবেদন পরমান্ন ভোগ

রাজ পরিবার ও রাজরীতি মেনে সোমবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ শুরু হল কোচবিহারের বড় দেবী মায়ের সপ্তমীর পুজো। ঐতিহ্যবাহী এই পুজো শুধু কোচবিহার নয়, সমগ্র উত্তরবঙ্গের মানুষের আবেগকে ছুঁয়ে যায়। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসা এই পুজোর মাহাত্ম্য আজও অটুট। আর সপ্তমীর দিনটি তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

That tradition is still on for Coochbehar Baro Devi Puja

মনিরুল হক: রাজ পরিবার ও রাজরীতি মেনে সোমবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ শুরু হল কোচবিহারের বড় দেবী মায়ের সপ্তমীর পুজো। ঐতিহ্যবাহী এই পুজো শুধু কোচবিহার নয়, সমগ্র উত্তরবঙ্গের মানুষের আবেগকে ছুঁয়ে যায়। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসা এই পুজোর মাহাত্ম্য আজও অটুট। আর সপ্তমীর দিনটি তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

সকালে মহাষষ্ঠীর পর, সপ্তমীর কল্পারম্ভ ও নবপত্রিকা প্রবেশের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল আচার। সোমবার সকাল সাড়ে দশটার সময় নির্দিষ্ট মহূর্তেই পুরোহিত মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে দেবী দুর্গার সপ্তমী পুজো আরম্ভ করেন। পুজোর বিশেষ আকর্ষণ হল "পরমান্য ভোগ" প্রদান। এই ভোগ সাধারণ ভোগ নয়, বরং রাজরীতিতে নির্দিষ্ট উপকরণ ও নির্দিষ্ট রীতিনীতির মধ্য দিয়ে দেবীকে নিবেদন করা হয়। 

আরও পড়ুন: 

পুরোহিতদের মতে, এই পুজোর কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম আজও কঠোরভাবে মানা হয়। সপ্তমীর সকালে দেবীর কাছে প্রথমে কলা বউ নিবেদন করা হয়। তারপর বিভিন্ন ফলমূল, মিষ্টি ও পরমান্য ভোগ উৎসর্গ করা হয় দেবীকে। এই ভোগে থাকে পায়েস, মিঠা চাল, নানা রকম মিষ্টি ও বিশেষ করে খাঁটি ঘিতে রান্না করা উপকরণ। বিশ্বাস করা হয়, দেবী এই ভোগ গ্রহণ করলে পরিবার তথা রাজ্যবাসীর শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় থাকে।

স্থানীয়রা বলেন, বড় দেবীর পুজো মানেই এক অন্যরকম আবেগ। রাজাদের আমল থেকে শুরু হওয়া এই পুজো আজও একই গাম্ভীর্য ও ঐতিহ্য মেনে পালিত হয়। সপ্তমীর দিন রাজপরিবারের সদস্যরা পুজোয় উপস্থিত থাকেন এবং স্থানীয় ভক্তরাও ভিড় জমান পুজোমণ্ডপে।

পুরোহিতদের ভাষায়, "এই পুজো শুধু পূজা নয়, এটা হল কোচবিহারের এক ঐতিহাসিক সংস্কার। দেবীর সপ্তমী পুজোতে ভোগ নিবেদন ও নানা আচার আজও একইভাবে চলে আসছে।" রাজরীতি মেনে হওয়া এই পুজো কোচবিহারবাসীর কাছে শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং ঐতিহ্য ও গৌরবের প্রতীক।