‘আগের বছর দুর্গাপুজোয় প্রেমের শুরু আর এবার বিয়ের তোড়জোড়!’ প্রেম-উৎসবের আনন্দে ভাসছেন মধুমিতা
Madhumita Sarkar: মধুমিতা সরকারের কাছে এবারের পুজো তাই আরও খানিকটা বেশি বিশেষ, বেশি মধুর।

গত বছরের দুর্গাপুজোতেই শুরু হয়েছিল প্রেমের গল্প। ধূপ-ধুনোর গন্ধ, ঢাকের বাজনা আর আলোয় ঝলমল মণ্ডপের ভিড়ের মাঝে নীরবে অঙ্কুরিত হয়েছিল অনুরাগ। বছর ঘুরে আবার এসেছে সেই উৎসবের সময়। মধুমিতা সরকারের কাছে এবারের পুজো তাই আরও খানিকটা বেশি বিশেষ, বেশি মধুর।
নতুন ধারাবাহিক শুরু করেছেন মধুমিতা। বহু বছর পর ছোটপর্দায় নায়িকা হয়ে ফেরা চাট্টিখানি কথা নয়! টিআরপি-র দৌড়ে সেরা হওয়ার বিরাট দায়িত্ব তণ্বী সুন্দরীর কাঁধে। তাই পুজোর দিনগুলিতেও তাঁকে ঘিরে থাকবে ‘লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন’-এর হাঁকডাক। তিনটি দিন ছুটি পেলেও হয়তো ষষ্ঠী-সপ্তমী কাটবে শুটিং ফ্লোরেই। আজকাল ডট ইনকে তিনি বলেন, “ছুটির দিনগুলোতে চুটিয়ে আনন্দ করব। পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটাব। খাওয়াদাওয়া, ঠাকুর দেখা, কিছুই বাদ রাখব না। আগের বছর নানা কারণে স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়নি। এবার সেটা করব। এছাড়াও আমার এক বন্ধুর বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। ওখানে হইহুল্লোড় বাঁধাধরা।”
গত বছর পুজোর সময় শৈশবের বন্ধু দেবমাল্য চক্রবর্তীর প্রেমে পড়েন মধুমিতা। উৎসবের গন্ধ গায়ে মেখে কাছাকাছি আসা। এই বছর চলছে বিয়ের প্রস্তুতি। শীত পড়তেই সাতপাক ঘোরার পালা। পূর্বরাগ থেকে প্রণয়, শরতের মেঘের মতো নস্টালজিয়া ভেসে বেড়ায় নায়িকার মনে। টেলিভিশনের ‘পাখি’-র কথায়, “এর আগের বছরের পুজোটা ছিল অন্য রকম। কোনও দিন ভুলব না। একটা পুজোয় প্রেম শুরু হল, অন্যটায় বিয়ের প্রস্তুতি। কী ভাবে যে একটা বছর কেটে গেল বুঝলাম না। আসলে এত ব্যস্ততার মাঝে এত কিছু টেরই পাইনি। খুব সুন্দর ভাবে একসঙ্গে দিনগুলো কাটিয়ে দিয়েছি আমরা।”
অষ্টমীতে নতুন শাড়ি পরে মনের মানুষকে পাশে নিয়ে দেবীকে পুষ্পাঞ্জলি দেবেন মধুমিতা। বিয়ের পাশাপাশি পুজোয় শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিও তুঙ্গে। জোরকদমে চলছে কেনাকাটা। আর হবু বরের নায়িকার কথায়, “আমি আর দেবমাল্য সারা বছরই একে অপরকে কিছু না কিছু দিই। তাই আলাদা করে পুজোর কেনাকাটা নিয়ে বিশেষ ভালা হয়নি। তবে নতুন জামাকাপড় কিনব তো অবশ্যই। আমরা কিন্তু এখন অফলাইনের থেকে অনলাইনেই বেশি ভরসা রাখছি। ওর যা পছন্দ হবে আমি কিনে দেব। আমার যা পছন্দ হবে, ও আমায় উপহার দেবে। তবে তার আগে মা-বাবার জন্য জামাকাপড় কিনব। আর সবার আগে কিনব মা দুর্গার জন্য শাড়ি।”
মেদহীন ঝরঝরে চেহারা ধরে রাখতে সারা বছরই চলে কড়া ডায়েট। অয়েল ফ্রি বা সেদ্ধ খাবারের শাসনে নিজেকে বেঁধে রাখেন মধুমিতা। কিন্তু পুজোতে নাকি সে সবের বালাই নেই। ইচ্ছেমতো পদ দিয়ে চারদিন চলে তুমুল পেটপুজো। তাঁর যুক্তি, “দেখুন, নায়িকারা পুজোতে খায় নাকি খায় না, জানি না। কিন্তু মানুষ তো খায়! আর আমিও মানুষ। এই ক’দিন ইচ্ছামতো মাটন বিরিয়ানি, রাস্তার ধারের স্টল থেকে রোল-চাউমিন খেয়ে নিই। কোনও নিষেধ মানি না।”
পুজোর ক’দিন নিয়ম না মানার নিয়মই যেন শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যায় মধুমিতাকে। যে শৈশবের পুজো জুড়ে ছিল পাট ভাঙা জামার গন্ধ, ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখা আর পাড়া জুড়ে ক্যাপ বন্দুকের চেনা আওয়াজ। স্মৃতির পাতা উল্টে মিষ্টি হাসির কন্যে বললেন, “এখনও বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখি। কিন্তু ছোটবেলার পুজোটা ছিল একেবারে অন্য রকম। ট্যাক্সি করে মা, বাবা, পিসিদের সঙ্গে ঠাকুর দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে দুর্গাবাড়িতে বসে থাকা। এই স্মৃতিগুলো আজও খুব মনে পড়ে। মা সময় বেঁধে দিতেন। বলে দিতেন, রাত ন’টার মধ্যে বাড়ি ঢুকতেই হবে। তাই বন্ধুদের সামনে বাড়ির কাছে দুর্গাবা়ড়িতে বসতাম। ক্যাপ, আলু বোম ফাটাতাম পাড়ায়। পুজোর আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া দিতাম। নাচ-গান-নাটক, কী করিনি! আজ অনেক কিছুই আছে। শুধু ওই দিনগুলো আর নেই।”