ভূত চতুর্দশী কী? কেন এই দিনে ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়? জানুন আসল কারণ
Bhoot Chaturdashi 2024 আগামীকাল ৩১ অক্টোবর কালীপুজো। ঠিক তার আগের দিন আজ বুধবার হল ভূত চতুদর্শী। দীপান্বিতা অমাবস্যার আগে চতুর্দশী তিথিতে হিন্দু মতে ভূত চতুর্দশী পালন করা হয়। হিন্দু ধর্মের প্রচলিত বিশ্বাস, এই দিনে নাকি মর্ত্যে নেমে আসেন মৃত পূর্ব পুরুষরা।
আজকাল ওয়েব ডেস্ক: দীপান্বিতা অমাবস্যার আগে চতুর্দশী তিথিতে হিন্দু মতে ভূত চতুর্দশী পালন করা হয়। হিন্দু ধর্মের প্রচলিত বিশ্বাস, এই দিনে নাকি মর্ত্যে নেমে আসেন মৃত পূর্ব পুরুষরা। তাঁদের খুশি করতে এবং অশুভ শক্তির বিনাশ করতে এদিন নানা আচার পালন করার প্রথাও রয়েছে। বিদেশের হ্যালোউইনের মতোই অনেকটা ভূত চতুর্দশী পালন করা হয়। যদিও প্রথাগত দিক থেকে অনেকাংশ মিললেও দুটি কিন্তু আলাদা।
আগামীকাল ৩১ অক্টোবর কালীপুজো। ঠিক তার আগের দিন আজ বুধবার হল ভূত চতুদর্শী। ভূত অর্থাৎ অতীত এবং চতুর্দশী অর্থাৎ কৃষ্ণপক্ষের ১৪ তম দিন। পিতৃ এবং মাতৃকুলের সাত পুরুষের উদ্দেশ্যে এদিন গৃহস্থ বাড়িতে জ্বালানো হয় ১৪ প্রদীপ। একইসঙ্গে এইদিনে রীতি রয়েছে ১৪ শাক খাওয়ারও।
পুরাণ মতে, অশুভ শক্তির বিনাশের পূর্বক্ষণই এই ভূত চতুর্দশী। এই দিনে দেবী কালী ধীরে ধীরে জাগ্রত হতে শুরু করেন। কথিত রয়েছে, চামুণ্ডারূপী চোদ্দ ভূত দিয়ে অশুভ শক্তিকে ভক্তের বাড়ি থেকে তাড়ানোর জন্যে মা কালী মর্তে নেমে আসেন৷
ভূত চতুদর্শীর দিন কেন ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়? আসলে মহালয়ার দিন যেমন পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে জল দান করার রীতি রয়েছে, তেমনই চোদ্দপুরুষের উদ্দেশ্যে ভূত চতুদর্শীতে প্রদীপ জ্বালানো হয়। কথিত রয়েছে, এইদিন বাড়িতে বংশের পুর্বপুরুষরা নাকি তাঁদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আশীর্বাদ করতে আসেন। আবার গ্রাম বাংলার প্রচলিত বিশ্বাস, অশুভ শক্তি বা ভূত-প্রেত আলো দেখলে ভয় পায়। তাই এই দিনে ভূত-প্রেতদের নিজেদের বাড়ি থেকে দূরে রাখার জন্য বাড়িতে বাড়িতে ১৪ প্রদীপ জ্বালানোর রীতি প্রচলিত আছে।
আসলে মৃত্যুর পর আত্মারা নাকি প্রকৃতির মধ্যে বিলীন হয়ে যায়। একে বলা হয় পঞ্চভূত। এদিন ১৪ প্রদীপ জ্বালানোর আগে ১৪ শাক খেয়ে ১৪ পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। মূলত ১৪ ধরণের শাক একসঙ্গে রান্না করে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।নিয়ম অনুযায়ী, ভূত চতুর্দশীর দিন প্রথমে স্নান করে শুদ্ধ হয়ে নিতে হয়। এরপর চোদ্দ শাক রেঁধে খেয়ে চোদ্দ প্রদীপ জ্বালানোর রীতি।
পৌরাণিক কাহিনির সঙ্গেই যে কোনও বিষয়ের যেমন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা থাকে, এক্ষেত্রেও তেমনটা রয়েছে। আসলে সাধারণত শরতের শেষ এবং হেমন্তের শুরুতে আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়। ফলে এই সময়ে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। বাড়তে থাকে নানা রকম মরশুমি রোগের উপদ্রব । আবার হেমন্তের শুরুতে পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে বাজি পোড়ানো হয়। খাবারে বা চোখ-মুখে পোকা যাতে না হয়, তাই গ্রাম বাংলায় প্রদীপ বা আলো জ্বালানোর রীতি রয়েছে।