‘কাকে দেখলাম? আজও বুঝিনি সেদিন রাতে কী হয়েছিল...’ভূত চতুর্দশীর আগে হাড়হিম অভিজ্ঞতা জানালেন অম্বরীশ

Ambarish Bhattacharya ভূত চতুর্দশীতে উঠে আসে ভূতপ্রেত নিয়ে নানান সব কাহিনি। সত্যি কি ‘তেনাদের’ অস্বস্তি রয়েছে? কেউ তাঁদের অনুভব করেছেন। কেউ আবার ব্যাখ্যাহীন ভূতুরে ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন। ঠিক যেমন অভিজ্ঞতা হয়েছে অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্যের। স্মৃতির পাতায় ডুব দিয়ে সেই হাড়হিম ঘটনা তুলে ধরলেন অভিনেতা।

Actor Ambarish Bhattacharya shares his own ghostly experience in bhoot chaturdashi before kalipuja 2024

নিজস্ব প্রতিনিধি: পশ্চিমে বেশ কয়েক বছর ধরে ধুমধাম করে পালন করা হয় হ্যালোইন। আর বাংলায় খানিকটা সেই কায়দায় কালীপুজোর আগের দিন হাজির হয় ভূত চতুর্দশী। যদিও প্রথাগত দিক থেকে অনেকাংশ মিললেও দুটি কিন্তু আলাদা। সে যাই হোক, বাঙালি চোদ্দ শাক খেয়ে আর ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে ভূত চতুর্দশী পালন করে আসছে বছরের পর বছর। 

হিন্দু ধর্মের প্রচলিত বিশ্বাস, ভূত চতুর্দশীর দিনে নাকি মর্ত্যে নেমে আসেন মৃত পূর্ব পুরুষরা, তাঁদের খুশি করতে এদিন নানা আচার পালন করার প্রথাও রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে পুরাণের আরও অনেক তত্ত্বও। আর এই দিনেই উঠে আসে ভূতপ্রেত নিয়ে নানান সব কাহিনি। সত্যি কি ‘তেনাদের’ অস্বস্তি রয়েছে? কেউ তাঁদের অনুভব করেছেন। কেউ আবার ব্যাখ্যাহীন ভূতুরে ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন। ঠিক যেমন অভিজ্ঞতা হয়েছে অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্যের। স্মৃতির পাতায় ডুব দিয়ে সেই হাড়হিম ঘটনা তুলে ধরলেন অভিনেতা।  

বেশ অনেকদিন আগের কথা। অম্বরীশ তখনও অভিনয় জগতে পা রাখেননি। দুই বন্ধু মিলে বেড়াতে গিয়েছিলেন ইছামতী নদীর পাড়ে টাকি হাসনাবাদে। অম্বরীশ বাড়ির পরিচারিকার কাছে শুনেছিলেন, সেখানকার জেলেপাড়া গ্রামের পুরুষেরা সন্ধের পর সকলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। সারা রাত নদীতে মাছ ধরে সকালবেলা সেই মাছ বিক্রি করে ফেরে। তাই সন্ধের পর থেকে এলাকাটা হয়ে ওঠে পুরুষ বর্জিত। মূলত জায়গাটির এমন গল্পের টানেই পরিচারিকার এক আত্মীয় বাবুলালের বাড়িতে উঠেছিলেন অম্বরীশ ও তাঁর বন্ধু। নিয়ম অনুযায়ী তাঁদেরও সূর্য ডোবার পর বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়।  

একেবারে বিদ্যুৎহীন গ্রাম। শুধু চাঁদের আলোটুকু ছাড়া কোথাও কোনও আলোর লেশমাত্র নেই। এমন মায়াবী পরিবেশে কী আর শহুরে মন ঘরে বসে থাকতে পারে! তাই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন দুই বন্ধু। বেশ খানিকটা হাঁটার পর তাঁরা খেয়াল করেন, অদূরে একটা নীল আলো জ্বলছে আর নিভছে। কাছে গিয়ে দেখতে পান, খাটো ধুতি পরা একজন বয়স্ক ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে বিড়ি খাচ্ছেন। বয়স ৬৫ থেকে ৭০। অম্বরীশের কথায়, “ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে আমরা বললাম ‘আপনি মাছ ধরতে যাননি?’ উনি উত্তরে বললেন ‘না আমি তো আর এখন মাছ ধরতে যাই না।’ আমরা নাম জিজ্ঞেস করতে উনি বলেন পরান মণ্ডল। তারপর নিজেই বললেন, ‘তোমরা তো বাবুলালের বাড়িতে এসেছ। এখন বেরিয়েছ কেন? বাবুলাল তোমাদের বলে দেয়নি যে সন্ধের পর এখানে ঘুরে বেড়ানোটা ঠিক নয়?” আমরা বললাম, ‘হ্যাঁ বলেছিল, কিন্তু আমরা তাও একটু বেরিয়েছি গ্রামটা দেখতে।’ পরান মণ্ডল তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে বললেন, ‘না সন্ধ্যার পর এখানে আর বেরিও না।’

বেশ কিছুক্ষণ ওই বৃদ্ধের সঙ্গে কথা  বলে বাড়ি ফিরে আসেন অভিনেতা। পরের দিন সকালে পরান মণ্ডলের সঙ্গে রাতে পরিচয় হওয়ার বিষয়টি জানান বাবুলালকে। কিন্তু তারপর যা জানতে পারেন তাতে দিনের বেলাতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে অম্বরীশের! বাবুলাল তাঁদের বলেন,  পরান মণ্ডল ওই দিন দুপুরেই মারা গিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে বিশ্বাস করতে পারেননি অম্বরীশ। সন্দেহ দূর করতে গিয়ে পৌঁছন পরান মণ্ডলের বাড়িতে। যেখানে দেখেন, উঠোনে জ্বলজ্বল করছে রাতের সেই বৃদ্ধ ব্যক্তির ছবি, কপালে চন্দনের টিপ, ফুলের মালা। সামনে জ্বলছে ধুপকাঠি...