মহারাষ্ট্রের স্থাপত্য মুর্শিদাবাদে! দুর্গা পুজোয় তৈরি হচ্ছে ১০০ ফুটের শিব মন্দির
৪৫ তম বর্ষে এবছর বহরমপুরের পুরাতন কান্দি বাসস্ট্যান্ড বাজার কমিটির দুর্গাপুজো থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে দেশের প্রাচীন স্থাপত্যকে। চমক দিতে মুর্শিদাবাদে তৈরি হচ্ছে মহারাষ্ট্রের অম্বরনাথ মন্দির।
১১ শতকে মহারাষ্ট্র তৈরি ঐতিহাসিক এই শিব মন্দির এখনও বছরভর পর্যটক এবং পুণ্যার্থীদের কাছে আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্র।
মহারাষ্ট্রের আকোলিতে তৈরি এই মন্দির "হেমাদপন্থী" শৈলী অনুসারে নির্মিত বলে অনেক ঐতিহাসিক দাবি করেন। এই ধরনের স্থাপত্য মন্দির নির্মাণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত বিরল এবং অনেকেরই দাবি পাহাড়ের গর্ভে নির্মিত এই মন্দিরটির অনুকরণীয় স্থাপত্য গোটা দেশে কোথাও নেই।
এবার সেই অনন্য স্থাপত্যকে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর শহরে তুলে নিয়ে আসতে চলেছেন পুরাতন কান্দি বাসস্ট্যান্ড বাজার কমিটির পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা। প্রায় ১০০ ফুট উচ্চতা এবং ১০০ ফুট চওড়া এই মন্ডপে আসল মন্দিরের মত অনন্য কারুকার্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে।
পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য ভীষ্মদেব কর্মকার বলেন, ‘মহারাষ্ট্রের মন্দিরের মতো আসল কারুকার্য আমাদের মন্ডপ সজ্জায় তুলে ধরার জন্য ফোম এবং স্পঞ্জ ব্যবহার করা হচ্ছে। আগামী চতুর্থীর দিন যাতে এই পুজোর উদ্বোধন করা যায় সেই কারণে মন্ডপ শিল্পীরা দিনরাত এক করে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। তবে বৃষ্টির জন্য মণ্ডপ নির্মাণের কাজ বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে।‘
তিনি আরও বলেন, ‘৪৫ তম বর্ষে এবছর আমাদের প্রতিমা নির্মাণ শিল্পী উৎপল নাথ । প্রতিমা উচ্চতায় প্রায় ২০ ফুট এবং চওড়ায় প্রায় ৪৫ ফুট। সাবেকি ধাঁচের এই প্রতিমা তৈরি হবে সম্পূর্ণ মাটি দিয়ে। এমনকি প্রতিমার্ সাজসজ্জা সবকিছুই মাটি দিয়ে তৈরি করা হবে।‘
প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা বাজেটের এই পুজোর আলোকসজ্জাও এবার হবে নজরকাড়া। মণ্ডপ এবং তার আশেপাশের এলাকা আলোর মালায় সাজিয়ে তোলার জন্য কাটোয়া থেকে আসছেন আলোক শিল্পীরা। পুজো উদ্যোক্তারা বলেন, ‘অম্বরনাথ মন্দিরের ইতিহাস লাইট এবং সাউন্ড-এর মাধ্যমে পুজোর দিনগুলোতে আমরা তুলে ধরব। দর্শনার্থীরা পুজোমণ্ডপ ঘুরে দেখতে দেখতেই প্রাচীন মন্দিরের ইতিহাস জানতে পারবেন।‘
প্রতি বছরই এই পুজো কমিটির ঠাকুর এবং মণ্ডপসজ্জা দেখতে মুর্শিদাবাদ জেলার নানা প্রান্ত থেকে অগণিত মানুষ বহরমপুর শহরে ভিড় করেন। পুজো কমিটি জানাচ্ছে, ‘পুজোর দিনগুলোতে প্রতিদিন আমাদের মণ্ডপে এক লক্ষের বেশি মানুষের সমাগম হয়।।দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ প্রশাসন ছাড়াও এবছর পুজো কমিটির তরফ থেকে অতিরিক্ত স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করা হবে এবং বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীরাও থাকবেন।‘
পুজোর আনন্দ সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য উদ্বোধনের দিন প্রায় এক হাজার দুঃস্থ মানুষকে পুজো উদ্যোক্তাদের তরফে নতুন বস্ত্র দানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
৪৫ তম বর্ষে এবছর এই দুর্গা পুজোর উদ্বোধক থাকবেন বহরমপুরের সাংসদ ইউসুফ পাঠান। এর পাশাপাশি চতুর্থীর দিন উদ্বোধনের সময় উপস্থিত থাকবেন তৃণমূল কংগ্রেসের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার সহ টলিউডের চেনা মুখেরা।