মহম্মদ সোহেলর নিখুঁত কাজ চুঁচুড়ার পুজো মণ্ডপে, কলকাতার মা ফ্লাইওভার এবার পঞ্চানন তলায়
বিবিধের মাঝে মিলন। এটাই তো ভারতবর্ষ। বালির শিল্পী মহম্মদ সোহেলর সেই ভাবনা থেকেই এবারের পুজোয় মণ্ডপে ফুটে উঠছে নক্ষত্র বাহার থিম। চন্দননগরের শিল্পী সোহেল মূলত স্যান্ড আর্ট নিয়ে কাজ করেন। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে জগদ্ধাত্রী পুজো, দুর্গা পুজোও করছেন। এবার চুঁচুড়ার পার্বতী রায় লেন সার্বজনীন দুর্গা পুজোর মণ্ডপ সজ্জা হচ্ছে তাঁরই হাতে।

মিল্টন সেন, হুগলি: বিবিধের মাঝে মিলন। এটাই তো ভারতবর্ষ। বালির শিল্পী মহম্মদ সোহেলর সেই ভাবনা থেকেই এবারের পুজোয় মণ্ডপে ফুটে উঠছে নক্ষত্র বাহার থিম। চন্দননগরের শিল্পী সোহেল মূলত স্যান্ড আর্ট নিয়ে কাজ করেন। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে জগদ্ধাত্রী পুজো, দুর্গা পুজোও করছেন। এবার চুঁচুড়ার পার্বতী রায় লেন সার্বজনীন দুর্গা পুজোর মণ্ডপ সজ্জা হচ্ছে তাঁরই হাতে।
মণ্ডপে ফুটিয়ে তুলেছেন শচীন, সৌরভ, বিরাটের মতো ক্রিকেট নক্ষত্রদের। আছেন গানের জগতের আশা ভোঁসলে, অরিজিৎ সিং, এ আর রহমানরা। আছেন অন্য খেলার জগতের নীরজ চোপড়া, ডি গুকেশ, মেরি কমরা। আছেন অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান। যাঁরা জীবিত কিম্বদন্তী, তাঁদের অনেককেই স্যালুট জানিয়েছেন সোহেল তাঁর থিমের মাধ্যমে।
কোনও সেলিব্রিটি, সে সিনেমার জগতের হোক বা খেলার, গানের জগতের অথবা শিল্পের, তাঁদের ফ্যানেরাও নানা ভাষা নানা ধর্ম বর্ণের। সেই লিভিং লেজেন্টদের তাঁর থিমে তুলে ধরেছেন সোহেল। মা দুর্গা এই কটা দিন যেখানে থাকবেন সেই দায়িত্ব সাহিলকে দেওয়া হয়েছে তার জন্য ক্লাব কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন শিল্পী।
বর্তমান সময়ে সব কিছুতেই ধর্মীয় ভাবাবেগ থাকতে দেখা হয়। সেই সময় সোহেল যে কাজ করছেন, তা এক কথায় অনবদ্য। পুজো কমিটির সদস্য শুভ মুখার্জি বলেন, 'সোহেলের কী জাত কী ধর্ম সেটা আমরা দেখি না। কারণ ওর সবচেয়ে বড় পরিচয় হল উনি একজন শিল্পী। আর শিল্পীর কোনও জাত হয় না। তাঁর পরিচয় তাঁর শিল্প কর্মে। পার্বতী রায় লেন এবার ৩৯ বছরের পুজো সম্পন্ন করবে।তার জন্য সব রকম প্রস্তুতি সারা হয়েছে। মণ্ডপ সজ্জার কাজ প্রায় শেষ। কাপড়ের উপর ছবি এঁকে কাঁচের টুকরো দিয়ে নক্ষত্র বাহার করা হয়েছে।'
অন্যদিকে কলকাতার মা ফ্লাইওভার এবার চুঁচুড়ার পঞ্চানন তলায়। মা দুর্গার আরাধনায় থিম, মা ফ্লাইওভার। ৩২ তম বর্ষে চুঁচুড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতির থিম "নীড় ছোট, ক্ষতি নেই, আকাশ তো বড়।' চুঁচুড়া কামারপাড়ার রাস্তার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত চলে গেছে ফ্লাইওভার।
মণ্ডপ সজ্জার ভাবনায় তুলে ধরা হয়েছে গতিশীল পৃথিবীতে মানুষ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। জীবন সংগ্রামের এই লড়াইয়ে সময় নেই স্রোতের বিপরীতে বেঁচে থাকা জীবনগুলোকে উপলব্ধি করার। বড় বড় শহরের উড়ালপুলের নীচে যেসব মানুষ বসবাস করেন তাঁদের জীবন সংগ্রামকে তুলে ধরেছেন তাঁদের মণ্ডপের মাধ্যমে। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি হয়েছে দুর্গা প্রতিমা। থিম তৈরি করেছেন শিল্পী দেবদূত পাল এবং সৌরভ ঘোষ। টানা তিন মাস ধরে মণ্ডপ তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে টিন, কাঠ, লোহা, ফাইবার ইত্যাদি।
ছবি: পার্থ রাহা