'বিবিধের মাঝে মিলন', এটাই তো ভারতবর্ষ, সেই ভাবনা থেকেই পুজো মণ্ডপ সাজিয়েছেন মহম্মদ সোহেল

Durga Puja 2025  Chinsurah Parbati roy lane Puja update
মিল্টন সেন, হুগলি: দেখতে দেখতে এসে গেল পুজো। মহালয়া পেরিয়েও গেল একদিন দুম করে। শহর, শহরতলির আনা জায়গায় ইতিমধ্যে পুজো মণ্ডপ খুলে গিয়েছে। ভিড় করছেন মানুষ। তার মাঝেই নজর কাড়ছে চুঁচুড়ার এই পুজোও। বিবিধের মাঝে মিলন আর সেটাই যে ভারতবর্ষ, তা যেন ফুটে উঠেছে এই পুজোয়। শিল্পী সোহেল মূলত স্যান্ড আর্ট নিয়ে কাজ করেন। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে জগদ্ধাত্রী পুজো, দুর্গা পুজোও করছেন। আর তাতেই নজর কাড়ছেন সকলের।
 
এবার চুঁচুড়ার পার্বতী রায় লেন সর্বজনীন দুর্গা পুজোর মণ্ডপ সজ্জা হচ্ছে তাঁরই হাতে। মণ্ডপে ফুটিয়ে তুলেছেন,শচীন সৌরভ বিরাট ক্রিকেট নক্ষত্র। রয়েছেন গানের জগতের আশা ভোঁসলে,অরিজিৎ সিং, এ আর রহমানরা। অন্য খেলার জগতের নীরজ চোপড়া,ডি গুকেশ,মেরি কম, অমিতাভ বচ্চন,শাহরুখ খান। যাঁরা জীবিত কিম্বদন্তী তাঁদের অনেককেই স্যালুট জানিয়েছেন সোহেল তাঁর থিমের মাধ্যমে।
 
 
 
মা দুর্গা এই কটা দিন যেখানে থাকবে, সেই দায়িত্ব সাহিলকে দেওয়া হয়েছে। তাঁর জন্য ক্লাব কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন শিল্পী। পুজো কমিটির সদস্য শুভ মুখার্জী বলেন, সোহেলের সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন শিল্পী। পার্বতী রায় লেন এবার ৩৯ বছরের পুজো সম্পন্ন করবে। তার জন্য সব রকম প্রস্তুতি সারা হয়েছে। মণ্ডপ সজ্জার কাজ প্রায় শেষ। কাপড়ের উপর ছবি এঁকে কাঁচের টুকরো দিয়ে নক্ষত্র বাহার করা হয়েছে।
জেলার পুজো প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ৫৯ তম বর্ষে এবছর মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর শহরের অন্যতম বিখ্যাত দুর্গাপুজো বালার্ক সংঘের পুজো। এই পুজোর এবারের থিম 'সুরের সেতু'। ভারতরত্ন কোকিলকণ্ঠী  লতা মঙ্গেশকরকে সম্মান জানিয়ে পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা এবছর এই থিম বেছে নিয়েছেন। 

জেলার দুর্গাপুজোর মানচিত্রে বরাবরই বিখ্যাত মুর্শিদাবাদের বিষ্ণুপুর কালীবাড়ি এলাকার বালার্ক সংঘ। প্রতিবছরই বিভিন্ন রকমের থিমের পুজো করে জেলাবাসীকে তারা চমক দেয়। গত বছর তাদের তৈরী 'রাজস্থানের রাজপ্রাসাদ' দেখার জন্য মানুষের ঢল নেমেছিল বহরমপুর শহরে।  থিম পুজোর ধারা অব্যাহত রেখে এবছর বালার্ক সংঘের পুজো উদ্যোক্তারা বেছে নিয়েছেন 'সুরের সেতু' ভাবনাকে। 

বালার্ক সংঘ দুর্গা পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা তথা ক্লাবের সম্পাদক অমিত গুহ পাট্টাদার বলেন,' প্রয়াত কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকরকে সম্মান জানিয়ে এবছর পুজোর থিম হিসেবে আমরা 'সুরের সেতু' ভাবনাকে বেছে নিয়েছি। দুর্গাপুজোর গোটা প্যান্ডেলটাই হবে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের 'রেপ্লিকা' ব্যবহার করে। মূল প্যান্ডেলটা দেখতে হবে গিটারের মতো, যার উচ্চতা প্রায় ৬৭ ফুট ।  মণ্ডপটি চওড়ায় প্রায় ৪২ ফুট। '

তিনি বলেন, 'মন্ডপের ভেতর প্রবেশ করলে দর্শনার্থীরা মাতৃ প্রতিমার  সঙ্গে দেখতে পাবেন বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র। মন্ডপকে বাদ্যযন্ত্র দিয়ে সাজিয়ে তোলার জন্য বাঁশ-বেত ও অন্যান্য বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে তানপুরা, গিটার ,তবলা-সহ আরও বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট বাদ্যযন্ত্র।  সেগুলো দিয়েই  মন্ডপের ভেতরের অন্দরসজ্জা করা হবে।'
 
পুজোর উদ্যোক্তারা জানান, এবছর উল্টো রথের দিন খুঁটি পূজার  মধ্যে দিয়েই প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের এক বিখ্যাত ডেকরেটর সংস্থার কর্মীরা দিনরাত অনলস পরিশ্রম করে 'সুরের সেতু' থিমের বাস্তবায়ন করছেন। 

বালার্ক সংঘের দুর্গা পুজোর প্রতিবছরেরই অন্যতম আকর্ষণ থাকে আলোকসজ্জা। জেলার নামী আলোকশিল্পীরা এই পুজোর জন্য তৈরি করছেন  আলোর ঝর্ণাধারা। পুজোর দিনগুলোতে প্যান্ডেল থেকে প্রায় ৫০০ মিটার পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের আলোক সজ্জায় সাজানো হবে গোটা এলাকা।