প্রবাসে পুজোর উন্মাদনা, রিডিংয়ে শরতের ছোঁয়া
শিউলি ফুলের গন্ধ আর কাশফুলের দোলা, দুর্গাপুজো বাঙালির হৃদয়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল উৎসব। কলকাতার গলিতে প্যান্ডেল, আলো আর ঢাকের তালে যে উন্মাদনা, সেই আবেগই যেন ভেসে আসে হাজার মাইল দূরে ব্রিটেনের রিডিং শহরে।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: শিউলি ফুলের গন্ধ আর কাশফুলের দোলা, দুর্গাপুজো বাঙালির হৃদয়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল উৎসব। কলকাতার গলিতে প্যান্ডেল, আলো আর ঢাকের তালে যে উন্মাদনা, সেই আবেগই যেন ভেসে আসে হাজার মাইল দূরে ব্রিটেনের রিডিং শহরে।
ব্রিটিশ, বাংলাদেশি ও এশিয়ার নানা দেশের মানুষ একত্রিত হয়ে প্রমাণ করছেন ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। রিডিংয়ের পূজো শুধুই প্রবাসীদের উৎসব নয়, এ এক আত্মপরিচয়ের উদযাপন। দূর দেশে থেকেও মন খুঁজে পায় ‘বাড়ি’র গন্ধ।প্রবাসেও শরতের হিমেল হাওয়া মনে করিয়ে দেয়, পুজো এসে গেছে।
এই পুজোর আয়োজন করে বেঙ্গলি কালচারাল সোসাইটি, রিডিং। সংগঠনের মুখপাত্র ও কর্ণধার শুভায়ন সেনগুপ্ত বলেন, “তিথি মেনে পূজিত হচ্ছেন দশভূজা দেবী দুর্গতিনাশিনী। আমাদের ঈষ্টদের করে যাওয়া পুজোর আচার, নিয়মকানুন কাস্টমাইজ করার সাহস আমাদের নেই। এখানে কুমারী পুজো, সন্ধিপুজোয় ১০৮টি প্রদীপ, পদ্মফুল, অঞ্জলি ও ঢাক- সবই থাকে। শুধু বদলে যায় ঠিকানা, বদলায় না আত্মার টান।”
অন্যদিকে, স্লাউয়ের দুর্গাপুজো এ বছর সপ্তম বছরে পা দিল। হাজার মাইল দূরে থেকেও প্রবাসী বাঙালির কাছে এই পূজো শুধু ধর্মীয় আচার নয়, বরং এক বিশাল সাংস্কৃতিক মিলনমেলা। কলকাতার ভিড় কিংবা কাশবনের হাওয়া না থাকলেও, ঢাকের তালে, মণ্ডপের আলোয় আর পরিচিত মুখের হাসিতে এখানে ভেসে ওঠে ঘরে ফেরার আনন্দ। স্লাউ, হ্যারো, ক্রয়ডন, ইস্ট লন্ডন সব প্রান্তের মানুষ এসে মিলে যায় এক আবেগে, এক উৎসবে।
এবারের আড্ডার পুজোর বিশেষ আকর্ষণ তার থিম। বাংলার চায়ের দোকান। কাঠের বেঞ্চ, কাগজের কাপ, ভাপ ওঠা চা আর অচেনা-চেনা মুখের আড্ডায় যেন ফিরে আসে পাড়ার মোড়ের সেই সাদামাটা ঠেক। সকাল থেকে রাত অবধি চায়ের ধোঁয়ার ফাঁকে গড়ে ওঠে নতুন বন্ধন, ভাঙাগড়া সম্পর্ক, কবিতা কিংবা গান। উদ্যোক্তাদের কথায়, চা শুধুই পানীয় নয়, এটি সম্পর্কের বাঁধন, চিন্তার আদানপ্রদান আর আনন্দের উৎস। প্রবাসেও সেই স্মৃতি জীবন্ত রাখতে আড্ডার পূজোয় তৈরি হচ্ছে এক টুকরো সাবেকি বাংলা।