বৈষ্ণব,শৈব,শাক্ত তিন মতেই পূজিতা হন উমা! চার শতাব্দী পেরিয়েও অমলিন সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের দুর্গা পুজো

চারশো বছরের বেশি সময় পেরিয়েও বাড়ির দুর্গা পুজোর ধারা জিইয়ে রেখেছে এই পরিবার।

historical rituals of sabarna roychowdhury family durga puja ent
আটচালার প্রতিমা

আজকাল ওয়েবডেস্ক: তাঁরাই ছিলেন কলকাতার আদি মালিক। সময়ের হাত ধরে হাতবদল হয়েছে কলকাতার। গ্রামের জায়গায় গজিয়ে উঠেছে একটা আস্ত শহর। আর এখন সে তকমা পেয়েছে মহানগরের। তবুও অপরিবর্তিত কলকাতার সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়ির ঐতিহ্য। চারশো বছরের বেশি সময় পেরিয়েও বাড়ির দুর্গা পুজোর ধারা জিইয়ে রেখেছে এই পরিবার।

সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের আদি বাসস্থান ছিল কনৌজে। এরপর সুতানুটিতে আসা। ১৬০০ সালে হালিশহরের বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেন সাবর্ণরা। ১৬১০ সাল থেকে দুর্গাপুজো শুরু করলেন লক্ষ্মীকান্ত রায়চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী।একচালা দুর্গাপ্রতিমার পুজো শুরু করেছিলেন সাবর্ণরা। একটিমাত্র চালচিত্রে আঁকা থাকে দশমহাবিদ্যা এবং রাধা-কৃষ্ণের ছবি। 

১৬১০ সালে, পুজো একটাই হত। তবে এখন সাবর্ণদের আটটি শরিকি বাড়িতে পুজো হয়। সখের বাজার বড়িশাতেই রয়েছে ৬টি বাড়ি। আটচালা, বড়বাড়ি, মেজবাড়ি, মাঝের বাড়ি, বেনাকি বাড়ি ও কালীকিঙ্কর ভবন। এ ছাড়া নিমতা ও উত্তর ২৪ পরগণার দুটি শরিকি বাড়িতেও পুজো হয়। মোটামুটি একই নিয়ম বহাল রয়েছে পুজোর। একমাত্র নিমতার বাড়ির পুজো ছাড়া বাকি সাতটি বাড়িতেই আমিষ ভোগ দেওয়া হয়। সন্ধিপুজোয় আবার ল্যাটা মাছ পোড়া দেওয়ার নিয়ম রয়েছে বলেও জানা যায়।

সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়িতে তিন মতে পুজো হয় দেবী দুর্গার। পঞ্চমী থেকে সপ্তমীতে নবপত্রিকা প্রবেশ পর্যন্ত বৈষ্ণব মতে পুজো। শাস্ত্র অনুযায়ী, সপ্তমীতে এক দিনের জন্য শ্বশুরবাড়ি আসেন মহাদেব। তাই ওই দিন পুজোর রীতি বদলে হয় শৈব মতে। আর সন্ধিপুজোর বলি হওয়ার পর থেকে তন্ত্র মতে পুজো হয়। পুজোর এই বিশেষ রীতির নাম ত্রিধারা। সময় বদলালেও, আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও এখনও একইরকম রয়েছে সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজো।