'পুজোতেই তো আমার প্রেম, অষ্টমীর দিন সোজা গিয়ে বলেছিলাম...’ দুর্গাপুজোর স্মৃতিতে ডুব টোটা রায়চৌধুরীর

Tota RoyChowdhuri উৎসবের দিনগুলি কেমন কাটে অভিনেতা টোটা রায়চৌধুরীর? ছোটবেলা থেকে তারকা হওয়ার পর কতটা বদলেছে তাঁর দুর্গাপুজো? জানালেন ‘চোখের বালি’র অভিনেতা।

Actor Tota Roy Chowdhuri shares memory about how he spend durga puja

আজকাল ওয়েব ডেস্ক: আকাশে-বাতাসে পুজোর গন্ধ। চারিদিকে সাজো সাজো রব। উমা আসছেন বাপের বাড়ি। আমজনতা হোক কিংবা তারকা, বাঙালির কাছে দুর্গাপুজোর আনন্দ একেবারে আলাদা। হাজার ব্যস্ততার মাঝেও বছরের ওই চার-পাঁচটা দিনের আনন্দে শামিল হতে চান সকলে। উৎসবের দিনগুলি কেমন কাটে অভিনেতা টোটা রায়চৌধুরীর? ছোটবেলা থেকে তারকা হওয়ার পর কতটা বদলেছে তাঁর দুর্গাপুজো? জানালেন ‘চোখের বালি’র অভিনেতা।

ছোটবেলার দিনগুলি একেবারে অন্যরকম কাটত টোটার। তাঁর কথায়, “পুজোয় নিখাদ আনন্দ যাকে বলে সেটা হতো। তখন থিম পুজো ছিল না। এত প্যান্ডেলও ছিল না। হাতেগোনা চার-পাঁচটা পুজো। পাড়ার পুজোয় সবার সঙ্গে দেখা হতো। সবাই সবার খোঁজ নিত। কী জামাকাপড় পরলাম সেটা গুরুত্ব পেত না। অবাধ স্বাধীনতা পেতাম। সেটাই উপভোগ করতাম। বাবা-মার থেকে পকেটমানি পেতাম, যা খুশি খেতে পারতাম। আর ছিল ক্যাপ পিস্তল। সবাই তখন অরণ্যদেব, ক্লিট ইস্টউড বা অমিতাভ বচ্চন। সকালবেলা ফুটবল খেলতে চলে যেতাম। এখনও পুজোর সকালে ফুটবল খেলাটা খুব মিস করি।”

পুজোয় বইপড়ারও উন্মাদনা ছিল টোটার। অভিনেতা বলেন, “পুজোর একটা আকর্ষণ ছিল পুজোবার্ষিকী। একটা পত্রিকা তো কিনতামই। কারণ ওখানে সত্যজিৎবাবু একটা করে ফেলুদা লিখতেন। বাবাও ফেলুদার ফ্যান ছিলেন। কে আগে পড়বে তাই নিয়ে বাবার সঙ্গে কাডাকাড়ি হতো।”

অঞ্জলি হোক কিংবা প্রেম, অষ্টমীর দিনটা বরাবরই টোটার কাছে ছিল বিশেষ। ‘রকি অর রানি কি প্রেম কাহানি’র অভিনেতার কথায়, “অষ্টমীতে অঞ্জলি দিয়ে পাড়ায় সবাই একসঙ্গে খেতাম। অঞ্জলিতে পাজামা-পাঞ্জাবি পরতেই হবে। পুজোতেই তো আমার প্রেম। আমি কলেজ থেকে সদ্য বেরিয়েছি, ও ফার্স্ট ইয়ারে। অষ্টমীর দিন সোজা গিয়ে বলেছিলাম, যদি পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে পার, পায়ের তলায় জমিটা একটু শক্ত হলেই তোমাকে বিয়ে করব। ওকে দেখে বুঝে গিয়েছিলাম, ওই আমার সোলমেট। বন্ধু, প্রেম অনেক হতে পারে সোলমেট একজনই হয়।”

টোটার কাছে ছোটবেলার থেকে এখনকার পুজো অনেকটাই বদলে গিয়েছে। অভিনেতার মতে, “এখন পুজো কেমন যেন মেকানিক্যাল হয়ে গিয়েছে। কোথাও বেরোতে পারি না। সাধারণত পুজোর সময় বিদেশ থেকে ডাক আসলেও ষষ্ঠী থেকে দশমী কলকাতাতেই থাকেন টোটা। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখন আর সকালের দিকে বেরোতে পারি না। রাতে ফ্যামিলির সঙ্গে বেরোই। প্যান্ডেল ফাঁকা দেখলে টুক করে ঢুকে পড়ি। কয়েকবার পুজো পরিক্রমার জাজ হয়ে গিয়েছি। ফাঁকায় ফাঁকায় ঠাকুর দেখতে পেরেছি। এখন একটা ছোট পুজোর পিছনেও অনেক চিন্তা-ভাবনা থাকে। এই ক্রিয়েটিভিটি বেশ লাগে।

পুজোয় শপিং নিয়ে অবশ্য খুব একটা মাথা ঘামান না টোটা। তাঁর কথায়, “ওটা আমার ডিপার্টমেন্ট নয়, সবটাই আমার স্ত্রী করে। ও সব জানে আমি কী পরি কোথায় কোন দোকানে পাওয়া যায়। পাজামা-পাঞ্জাবি, আর কিছু ক্যাজুয়াল পোশাক এটাই পুজোর শপিং লিস্ট। আর স্বাস্থ্য সচেতন অভিনেতার পুজোতেও কি খাওয়াদাওয়ায় রাশ টানেন? তাঁর স্পষ্ট জবাব, “ষষ্ঠী থেকে শুরু করে লক্ষ্মীপুজো কোনও ডায়েট চার্ট থাকে না।”