শাস্ত্র মেনে উমাকে বিদায় দিয়ে নতুন যন্ত্র বসলো মুর্শিদাবাদে

Durga Pujo 2025: আজ বিজয়া দশমী। আপামর বাঙালির মন আজ ভারাক্রান্ত। চারটে দিন ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে বাপের বাড়িতে কাটিয়ে মা দুর্গা আবার চলে যাবেন শ্বশুরবাড়ি, কৈলাসে।

New instrument installed in Murshidabad
এবছর দুর্গাপুজোর ভাসান সুচারুভাবে করার জন্য এক বিশেষ যন্ত্র চালু করল তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত জঙ্গিপুর পুরসভা।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: আজ বিজয়া দশমী। আপামর বাঙালির মন আজ ভারাক্রান্ত। চারটে দিন ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে বাপের বাড়িতে কাটিয়ে মা দুর্গা আবার চলে যাবেন শ্বশুরবাড়ি, কৈলাসে। তাই কি আজ আকাশেরও মুখ ভার?

 

বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়ে গিয়েছে বাড়ির দুর্গাপুজোগুলোর ভাসান। আজ বিকাল থেকেই শুরু হয়ে যাবে একাধিক বারোয়ারি পুজোর দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন। 

তবে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার হওয়ায় জেলার বিভিন্ন ঘাটগুলোতে ভাসানের সংখ্যা কম হতে পারে। আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার বেশিরভাগ দুর্গা প্রতিমার নিরঞ্জন হবে। 

এবছর দুর্গাপুজোর ভাসান সুচারুভাবে করার জন্য এক বিশেষ যন্ত্র চালু করল তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত জঙ্গিপুর পুরসভা। বিশেষ ওই যন্ত্রের উপর প্রতিমাকে বসানো হলে তা নিজে থেকে সাত পাক ঘুরে ভাগীরথী বক্ষে নিরঞ্জনের জন্য নেমে যাবে। 

জঙ্গিপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে , এবছর পুরসভা এলাকায় প্রায় একশোর বেশি বারোয়ারি এবং বাড়ির দুর্গা পুজো অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম বলেন,' জঙ্গিপুর পুরসভা এলাকার মধ্যে রঘুনাথগঞ্জ শহর এবং সংলগ্ন এলাকার বেশিরভাগ প্রতিমার নিরঞ্জন হয় রঘুনাথগঞ্জ সদরঘাটে। স্থানীয় মানুষদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল দুর্গা ঠাকুর নিরঞ্জনের জন্য ওই ঘাটে লোহার একটি র‍্যাম্প তৈরি করে দেওয়া, যাতে সহজে ঘাটের উপরের প্রান্ত থেকে দেবী প্রতিমাকে সরাসরি ভাগীরথী বক্ষে নিরঞ্জনের জন্য নামিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়। এলাকার পুজোকমিটিগুলোর দাবি মেনে আমরা ইতিমধ্যেই সদরঘাটে লোহার একটি র‍্যাম্প তৈরি করে দিয়েছি।'

 

তিনি জানান,' এই রাম্পে বল-বিয়ারিং ব্যবহার করে একটি ঘূর্ণায়মান যন্ত্র বসানো হয়েছে। যার উপর প্রতিমাকে রাখা হলে হিন্দু ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী প্রতিমাটি সাত পাক ঘুরবে। তারপরই নিরঞ্জনের জন্য ধীরে ধীরে নিচের দিকে নামতে থাকবে।'

 

স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিকাশ নন্দ বলেন,'বর্ষার কারণে ঘাটে জল-কাদা বেশি থাকায় প্রতিমা নিরঞ্জন করতে গেলে অনেকে অসুবিধার মধ্যে পড়তেন। সেই কারণেই পুরসভার তরফ থেকে বিশেষ এই যন্ত্রটি অর্ডার দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।'

 

তিনি আরও বলেন, 'এবছরের প্রতিমা নিরঞ্জন শেষ হয়ে যাওয়ার পর এই যন্ত্রটি পুরসভায় আগামী বছর ফের ব্যবহার করবে। সেই কারণে পুরসভা এই যন্ত্রটি সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করেছে।'

এছাড়াও ভাগীরথী নদীকে দূষণমুক্ত রাখার জন্য জঙ্গিপুর পুরসভার তরফ থেকে প্রায় ১৫ জন কর্মীকে ওই ঘাটে নিযুক্ত করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। এই কর্মীরা কোনও প্রতিমা নিরঞ্জন হওয়ার পরই সেই কাঠামো নদী বক্ষ থেকে তুলে ফেলবেন।

দুর্গাপ্রতিমা ভাসানের পর ভাগীরথী নদীকে দূষণমুক্ত রাখার জন্য একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে বহরমপুর পুরসভাও। বহরমপুর পুরসভা এলাকার বেশিরভাগ প্রতিমা নিরঞ্জন, কে এন কলেজ ঘাটে হয়। তাই সেই ঘাটটিতে পুরসভা এবং প্রশাসনের তরফে বিশেষ নজরদারি থাকছে আজ থেকেই। এর পাশাপাশি গোয়ালপাড়া ঘাট, খাগড়া ঘাট, কুঞ্জ ঘাট সহ আরও একাধিক ঘাটে পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুরসভার কর্মীরা থাকবেন। পুরসভার কর্মীরা প্রতিমা নিরঞ্জন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো জল থেকে তুলে ফেলবেন এবং জলের মধ্যে কোনও ফুল-মালা বা পাতা কাউকে ফেলতে দেওয়া হবে না।