লকগেট বালিচকের দুর্গোৎসবে অভিনব উদ্যোগ! তৃতীয় লিঙ্গের হাতে উদ্বোধন, সমাজসেবার বার্তা

Durga Pujo 2025: পশ্চিম মেদিনীপুরের বালিচক লকগেট সার্বজনীন দুর্গা পূজা উৎসব কমিটি এবছর তাঁদের ৩৫তম বর্ষে পদার্পণ করল এক বিশেষ এবং অনন্য উদ্যোগের মাধ্যমে। ষষ্ঠীর দিন পূজার উদ্বোধন করেন সমাজের মূলস্রোত থেকে প্রায়শই বঞ্চিত হয়ে আসা তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকজন প্রতিনিধিত্বশীল মানুষ।

Lockgate Balichaks Durga Puja is a unique initiative Inauguration by a third gender
ষষ্ঠীর দিন পুজোর উদ্বোধন করেন সমাজের মূলস্রোত থেকে প্রায়শই বঞ্চিত হয়ে আসা তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকজন প্রতিনিধিত্বশীল মানুষ।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: পশ্চিম মেদিনীপুরের বালিচক লকগেট সার্বজনীন দুর্গা পূজা উৎসব কমিটি এবছর তাঁদের ৩৫তম বর্ষে পদার্পণ করল এক বিশেষ এবং অনন্য উদ্যোগের মাধ্যমে। ষষ্ঠীর দিন পুজোর উদ্বোধন করেন সমাজের মূলস্রোত থেকে প্রায়শই বঞ্চিত হয়ে আসা তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকজন প্রতিনিধিত্বশীল মানুষ। পূজা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়েই তাঁরা সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একসঙ্গে আনন্দে সামিল হওয়ার অধিকারকে সামনে আনতে চেয়েছেন।

শুধুমাত্র পূজা উৎযাপনেই সীমাবদ্ধ না থেকে কমিটি এবছরও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেদের যুক্ত করেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুঃস্থ মানুষদের মধ্যে শাড়ি, ধুতি, লুঙ্গি ইত্যাদি বস্ত্র বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে গরিব পরিবারগুলিকে বিনামূল্যে মশারি প্রদান করা হয়। এই উদ্যোগে স্থানীয় মানুষদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে, এবং উপস্থিত সকলে এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান।

উৎসব কমিটি এখানেই থেমে থাকেনি। প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বিশেষ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে তাঁদের হাতে উপহার ও সম্মাননার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত প্রতিদিন পূজামণ্ডপ প্রাঙ্গণে ভোগ ও প্রসাদ বিতরণেরও ব্যবস্থা রয়েছে। কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিদিনই হাজারো মানুষের জন্য ভোগ রান্না করা হচ্ছে। পাশাপাশি যাতে কোনও দর্শনার্থী খালি হাতে না ফেরেন, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থাপনা রাখা হয়েছে।

পূজা কমিটির সম্পাদক জানান, “আমরা চাই আমাদের পুজো শুধু আনন্দ বা প্রদর্শনীতে সীমাবদ্ধ না থেকে মানুষের পাশে দাঁড়াক। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের হাতে উদ্বোধন করানো আমাদের কাছে প্রতীকী হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। সমাজে সকলের সমান অধিকার আছে, সেই বার্তাই আমরা দিতে চাই।”

অন্যদিকে, সাধারণ মানুষও এই নতুনত্ব ও সমাজমুখী কর্মকাণ্ডে খুশি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই ধরনের উদ্যোগ দুর্গাপুজোর প্রকৃত সামাজিক চেতনাকে সামনে আনে।

৩৫ বছর ধরে লকগেট বালিচক সার্বজনীন দুর্গা পূজা স্থানীয় মানুষের কাছে শুধুই এক উৎসব নয়, বরং সমাজের ঐক্য, সংহতি এবং মানবিকতার প্রতীক হয়ে উঠেছে। এবছরের এই অভিনব সূচনা সেই ধারাকেই আরও দৃঢ় করল।