দেশের শক্ররাই আসল অসুর! এই মণ্ডপে মা দুর্গার হাতে ‘বধ’ হলেন বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের রাষ্ট্রনেতারা

পুজোর থিম ‘দহন’। আর এই থিমের মাধ্যমে পুজোর উদ্যোক্তারা ফুটিয়ে তুলেছেন মা দুর্গার হাতে শত্রু রাষ্ট্রের দুই সর্বাধিনায়কের দেবী উমার হাতে পরাজয়।

In This Puja Pandal Bangladesh and Pakistan Leaders Depicted as Slain by Goddess Durga

আজকাল ওয়েবডেস্ক: হিন্দু পুরাণ মতে দেবী দুর্গা হিন্দু ধর্মের শক্তির প্রতীক এবং মহাশক্তিরূপে পূজিতা হন। মহাষষ্ঠীতে দেবী দুর্গার বোধনের মধ্যে দিয়ে আরাধনা শুরু হয়েছে। হিন্দু পুরাণ মতে দেবী দুর্গা দুষ্টের দমন ও সৃষ্টির পালন করেন। মহিষাসুর নামে এক অসুর, যাঁর দ্বারা দেবগণ পরাজিত হয়েছিলেন, তাঁকে বধ করার জন্য দেবতারা একত্রিত হয়ে দেবী দুর্গার সৃষ্টি করেন। দুর্গা নামের অপর অর্থই হল ‘অভেদ্য’ বা ‘অজেয়।  ৮৩ তম বর্ষে এই বছর মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর শহরের খাগড়া সাধক নরেন্দ্র স্মৃতি সংঘের পুজোর থিম ‘দহন’। আর এই থিমের মাধ্যমে পুজোর উদ্যোক্তারা ফুটিয়ে তুলেছেন মা দুর্গার হাতে শত্রু রাষ্ট্রের দুই সর্বাধিনায়কের দেবী উমার হাতে পরাজয়।

মুর্শিদাবাদ জেলার এই পুজোর মূল আকর্ষণ দেবী দুর্গা নয় বরং তাঁর হাতে বধ হওয়া দুই অসুর। দুর্গাপূজা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, অশুভ শক্তি যতই প্রভাবশালী হোক না কেন শুদ্ধ ও ন্যায়ের শক্তি সর্বদাই জয়ী হয়। মহিষাসুরের হাত থেকে দেবতাদের রক্ষা করার জন্য দেবী দুর্গার সৃষ্টি হয়েছিল। তিনি দশভুজা রূপে মহিষাসুরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। যুদ্ধ শেষে মহিষাসুর যখন মহিষের রূপ ধারণ করেন, তখন দেবী দুর্গা নিজের ত্রিশূল দিয়ে তাঁকে হত্যা করেন। দেবী দুর্গার এই বিজয়কে মহিষাসুরমর্দিনীও বলা হয়।

সাধক নরেন্দ্র স্মৃতি সংঘের এক চালার প্রতিমা নির্মাণ করেছেন জেলার অন্যতম বিখ্যাত প্রতিমা শিল্পী অসীম পাল। দেবী দুর্গার সঙ্গে এই মন্ডপে হাজির তাঁর পুত্র এবং কন্যারাও। কিন্তু সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে দেবীর পায়ের কাছে ত্রিশূলে বিদ্ধ অসুর এবং মায়ের হাতে থাকা অপর এক অসুরের কাটা মুন্ডু। প্রতিমা দেখতে আসা অনেকেরই মনে হয়েছে দেবীর পায়ের কাছে থাকা অসুরের মুখটি আদতে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপ্রধান ডঃ মহম্মদ ইউনুস এবং কাটা মুন্ডুটির অসুরটি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মত দেখতে।

পুজো কমিটির সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ দুবে বলেন, ‘আমাদের থিম ‘দহন’। আমরা চাই আমাদের দেশের যারা শত্রু আছেন তারা অগ্নিতে ‘দহন’ হয়ে যাক, অর্থাৎ শেষ হয়ে যাক।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিমা শিল্পীকে বলা হয়েছিল অসুর হিসাবে যেন দেশের শত্রুদের তৈরি করা হয়। আমরা সকলেই জানি এখন আমাদের দুই প্রতিবেশী, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের বর্তমান সম্পর্কের কথা। তাই অসুর হিসেবে ওই দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কথাই আমাদের মাথায় এসেছে।’

ক্লাবের সদস্যরা বলেন, পুজো প্যান্ডেলে যারা দুর্গা প্রতিমা দর্শন করতে আসছেন তারা অসুররুপী মহম্মদ ইউনুস এবং শাহবাদ শরিফকে দেখে প্রচন্ড খুশি হচ্ছেন। মানুষের ঢল নেমেছে আমাদের প্যান্ডেলে। ভারতের মানুষ এই দুই ব্যক্তিকে অসুর হিসেবেই দেখতে চান।

এই পুজোর পুরোহিত বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রতিবেশী বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপ্রধান মহম্মদ ইউনুস যে সমস্ত কার্যকলাপ করছেন তা কোনও শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয়। তিনি দিনের পর দিন খারাপ কাজকে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে প্রচুর বাঙালি হিন্দু থাকেন। রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে তাঁর উচিত সেই হিন্দুদের সুরক্ষা দেওয়া। কিন্তু তা তিনি দিতে পারছেন না। এর প্রতিবাদে আমরা দুর্গাপুজোয় অসুরের সঙ্গে মহম্মদ ইউনুসের মুখাবয়বের সাদৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছি। কেবলমাত্র প্রতিবাদ প্রদর্শনের জন্য আমরা একটি প্রতীকি মূর্তি তৈরি করেছি।’