শ্রীরামকৃষ্ণের স্নেহধন্য অধর সেনের বাড়ির দুর্গা যায় চায়না পালের হাত ধরে
একটা সময় বাবা বানাতেন প্রতিমা। ছোট্ট মেয়ে অপলক চোখে তাকিয়ে দেখতো সে প্রতিমা গড়া। একটু বড় হতেই সেও হাত লাগাল মূর্তি তৈরিতে।
দেবস্মিতা: কিছু লোক গাইছেন কীর্তন, কিছু লোক চোখ বুজে শুনছেন।এদের মধ্যে বসে আছেন দুজন। একজন গুরু আর একজন শিষ্য। জায়গাটা বেনিয়াটোলা লেন। গুরু আর কেউ নন স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণ। আর শিষ্য অধরলাল সেন। প্রিয় গৃহীশিষ্য অধরলাল সেনের বাড়িতে প্রায়ই আসতেন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ। শোনা যায়, একবার এসেছিলেন দুর্গাপুজো দেখতেও। সিঙ্গুরের আদি বাসিন্দা বাবা রামগোপাল সেন কলকাতায় এসে এই বাড়িতে প্রথম পুজো শুরু করেন। বাড়িতে এসেছিলেন সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ও। সেই বাড়ির প্রতিমা আসে বংশপরম্পরায় কুমোরটুলি থেকেই।
একটা সময় বাবা বানাতেন প্রতিমা। ছোট্ট মেয়ে অপলক চোখে তাকিয়ে দেখতো সে প্রতিমা গড়া। একটু বড় হতেই সেও হাত লাগাল মূর্তি তৈরিতে। ছোটো হাতে মাটির দলা নিয়ে খেলতে খেলতেই এভাবে তাঁরও শিল্পী হয়ে ওঠা। কথা বলছি কুমোরটুলির প্রতিমা শিল্পী চায়না পালের বিষয়ে। কুমোরটুলিতে খুব পরিচিত নাম এই চায়না পাল।
৯৪ সাল থেকে প্রতিমা গড়ছেন তিনি। তাঁর তৈরি প্রতিমার বৈশিষ্ট্য সাবেকী, সঙ্গে টানা চোখ, মুখে স্মিত হাসি, যেন মা হাসছেন। বাড়ির পুজো থেকে ক্লাবের পুজো প্রতি বছরই অনেক পুজোর বায়না পান কুমোরটুলির এই শিল্পী। মূলত তৈরি করেন একচালার ঠাকুর। সারা বছরই চলে প্রতিমা গড়ার কাজ। তবে অক্ষয় তৃতীয়া থেকে শুরু হয় দুর্গা প্রতিমা গড়ার শুরু এমনটাই জানিয়েছেন চায়না পাল। এ বছর হাওড়া রামকৃষ্ণ মিশন থেকে বাগবাজার বিবেকানন্দ মিশনের পুজোর মণ্ডপে দেখা মিলবে তাঁর হাতে গড়া প্রতিমার।
বড় পুজোর মধ্যে রয়েছে হাইল্যান্ড পার্কের পুজোও। হাসতে হাসতে আজকালকে বললেন, কাদা মাটির তাল থেকে মায়ের মূর্তি তৈরি এর মধ্যেই রয়েছে জীবনের স্বার্থকতা।